ড্রাইভারবিহীন ট্যাক্সি: প্রযুক্তি কি এবার চাকরি আর ডেটিংয়েরও ঠিকানা?
বর্তমান বিশ্বে প্রযুক্তির অগ্রগতি দ্রুত গতিতে বাড়ছে। সেই অগ্রগতির প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে স্বয়ংক্রিয় গাড়ি বা ড্রাইভারবিহীন ট্যাক্সির ধারণা থেকে।
এই ট্যাক্সি পরিষেবা নিয়ে এসেছে ‘ওয়েইমো’ (Waymo) নামক একটি কোম্পানি। গুগল সেলফ-ড্রাইভিং কার প্রজেক্ট হিসেবে ২০০৯ সালে যাত্রা শুরু করে এই কোম্পানিটি।
২০১৬ সালে এটি ‘ওয়েইমো’ নামে পরিচিত হয়। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকো, লস অ্যাঞ্জেলেস এবং ফিনিক্সের মতো শহরগুলোতে এই ট্যাক্সি পরিষেবা চালু রয়েছে।
ড্রাইভারবিহীন এই ট্যাক্সিগুলো কেবল যাত্রী পরিবহনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই, বরং এটি চাকরি এবং ডেটিংয়ের মতো বিষয়গুলোতেও সাহায্য করতে পারে।
সম্প্রতি, এই ট্যাক্সিগুলোতে অভিনব উপায়ে চাকরির বিজ্ঞাপন এবং ডেটিংয়ের প্রস্তাব দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
উদাহরণস্বরূপ, ‘ইনফ্লুর’ (Influur) নামক একটি কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) অ্যালেসান্দ্রা অ্যাঞ্জেলিনি, সিনিয়র সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার পদের জন্য একটি হাতে লেখা বিজ্ঞাপন দেন।
চাকরির আবেদন করার জন্য তিনি তার কোম্পানির ওয়েবসাইট এবং ইমেইল ঠিকানা উল্লেখ করেন। এই বিজ্ঞাপনটি একটি ওয়েইমো ট্যাক্সিতে রেখে আসা হয়।
আশ্চর্যজনকভাবে, এর ফলস্বরূপ তিনি প্রায় ৬০টি জীবনবৃত্তান্ত (সিভি) পান।
অন্যদিকে, ডেটিংয়ের জন্য আগ্রহীদের আকৃষ্ট করতে, একজন যাত্রী তার বয়স (২৬ বছর), উচ্চতা এবং অন্যান্য ব্যক্তিগত বিবরণ দিয়ে একটি নোট রেখে যান।
সেই নোটে তিনি একটি ফোন নম্বরও যুক্ত করেন। এর ফলস্বরূপ তিনি প্রায় ২০০টি সাড়া পান।
তবে, এই ধরনের প্রচারণার মূল আকর্ষণ হলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। কারণ, ট্যাক্সিতে রাখা এই ধরনের বিজ্ঞাপনগুলো অন্যান্য যাত্রীদের নজরে আসে এবং তারা সেগুলোর ছবি তুলে সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করে।
ফলে, কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই তা ব্যাপক পরিচিতি লাভ করে এবং বহু মানুষের কাছে পৌঁছে যায়।
যদিও এই ধরনের অভিনব পদ্ধতি কতদিন পর্যন্ত কার্যকর থাকবে, তা বলা কঠিন। কারণ, স্বয়ংক্রিয় ট্যাক্সি পরিষেবা যখন সাধারণ হয়ে উঠবে, তখন হয়তো এর আবেদন কমে যাবে।
তবে, প্রযুক্তির এই উদ্ভাবনী ব্যবহার আমাদের নতুন দিগন্তের দিকে নিয়ে যাচ্ছে, যেখানে পরিবহন ব্যবস্থা আরও উন্নত হওয়ার পাশাপাশি, আমাদের জীবনের অনেক দিকও প্রযুক্তিনির্ভর হয়ে উঠবে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান