ঈশ্বরের স্থপতি: গাউদিকে সাধুত্বের পথে আনছে ভ্যাটিকান!

বার্সেলোনার কিংবদন্তী স্থপতি আন্তোনিও গাউদিকে (Antoni Gaudí), যিনি ‘ঈশ্বরের স্থপতি’ নামে পরিচিত, ক্যাথলিক চার্চের একজন সন্ত হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার পথে রয়েছেন। সম্প্রতি ভ্যাটিকান সিটি এই ঘোষণা দিয়েছে।

গাউদির অসাধারণ স্থাপত্যশৈলী এবং গভীর ধর্মীয় অনুভূতির কারণে তাকে এই সম্মান জানানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

গাউদির সবচেয়ে বিখ্যাত কাজ হলো স্পেনের বার্সেলোনার সাগ্রাদা ফ্যামিলিয়া (Sagrada Família) ক্যাথেড্রাল। এই বিশাল এবং অসাধারণ গির্জার নির্মাণকাজ ১৮৮২ সালে শুরু হয়েছিল এবং এখনো তা সম্পন্ন হয়নি।

গাউদি তাঁর জীবনের শেষ ১২ বছর এই প্রকল্পের জন্য উৎসর্গ করেছিলেন। তাঁর ডিজাইন করা ভবনগুলোতে ধর্মীয় প্রতীক এবং গভীর আধ্যাত্মিকতার ছোঁয়া রয়েছে।

অনেকেই মনে করেন, এই স্থাপত্যশৈলী মানুষকে ক্যাথলিক ধর্মে আকৃষ্ট করেছে।

ভ্যাটিকান জানিয়েছে, পোপ ফ্রান্সিস গাউদির ‘বীরত্বপূর্ণ গুণাবলী’ (heroic virtues) স্বীকৃতি দিয়েছেন। এই ঘোষণার মাধ্যমে সন্ত হওয়ার দীর্ঘ প্রক্রিয়ার একটি প্রাথমিক ধাপ শুরু হলো।

কোনো ব্যক্তিকে সন্ত হিসেবে ঘোষণা করার আগে তাকে ‘ধন্য’ বা ‘বিরাট’ (Beatification) ঘোষণা করা হয়। গাউদিকে এই ধাপে উত্তীর্ণ হতে হবে, এরপর তিনি চূড়ান্তভাবে সন্ত হিসেবে অভিষিক্ত হবেন।

গাউদির অনুসারীরা বহু বছর ধরেই তাঁর সন্ত হওয়ার জন্য আবেদন করে আসছিলেন। তাঁদের মতে, গাউদির স্থাপত্যকর্মের মাধ্যমে ঈশ্বরের প্রতি গভীর ভক্তি প্রকাশ পায়।

এমনকি তাঁর নির্মিত কিছু ভবনের নকশা দেখে অনেকে খ্রিস্টধর্ম গ্রহণ করেছেন। ২০০৩ সালে গাউদি বিয়াটিফিকেশন সোসাইটির তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জোসে মানুয়েল আলমুজারা (José Manuel Almuzara) বলেছিলেন, “এখানে কোনো গুরুতর বাধা নেই।”

এই সোসাইটির প্রায় ৮০ হাজার সদস্য সারা বিশ্বে গাউদির কাছে প্রার্থনা করেন এবং তাঁর অলৌকিক ক্ষমতা প্রদর্শনের জন্য আবেদন জানান।

সাগ্রাদা ফ্যামিলিয়ার নির্মাণকাজ এখনো চলছে। গির্জাটি ২০১৬ সালে গাউদির মৃত্যুর শতবর্ষে সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে তা বিলম্বিত হয়েছে।

পর্যটকদের আগমন কমে যাওয়ায় নির্মাণকাজের অর্থ সংগ্রহেও সমস্যা হচ্ছে।

বার্সেলোনার পার্ক গুয়েল (Park Güell)-ও গাউদির উল্লেখযোগ্য কাজগুলোর মধ্যে অন্যতম। এই ঘোষণার মাধ্যমে গাউদির প্রতি সম্মান জানানো হলো, যিনি তাঁর কাজের মাধ্যমে আজও মানুষের মনে গভীর রেখাপাত করেন।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *