যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভুল করে বিতাড়িত হওয়া এক ব্যক্তিকে ফেরত পাঠাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন এল সালভাদরের প্রেসিডেন্ট নাইব বুকেলে। সোমবার হোয়াইট হাউসে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি এই সিদ্ধান্ত জানান। যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও, বুকেলে জানিয়েছেন যে তিনি ওই ব্যক্তিকে ফিরিয়ে আনতে পারবেন না।
আসল ঘটনা হলো, কিলার অ্যাব্রেগো গার্সিয়া নামের একজন ব্যক্তিকে গত ১৫ই মার্চ প্রশাসনিক ত্রুটির কারণে এল সালভাদরের একটি কারাগারে ফেরত পাঠানো হয়। অ্যাব্রেগো গার্সিয়া আগে মেরিল্যান্ডে বসবাস করতেন এবং তাঁর যুক্তরাষ্ট্রে থাকার সুরক্ষা ছিল। ২০১৯ সালে একটি অভিবাসন আদালত তাকে ফেরত পাঠানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসনের একটি সিদ্ধান্তের ফলে তাকে ফেরত পাঠানো হয়। এরপরই বিষয়টি নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের সময় বুকেলে বলেন, “আমি কিভাবে একজন সন্ত্রাসীকে যুক্তরাষ্ট্রে পাচার করতে পারি? আমি এটা করতে পারি না।” তিনি আরও যোগ করেন, “যুক্তরাষ্ট্রে তাকে ফেরত পাঠানোর ক্ষমতা আমার নেই।” এমনকি তিনি তাকে এল সালভাদরেও মুক্তি দিতে রাজি নন। বুকেলের মতে, তিনি সন্ত্রাসীদের মুক্তি দিতে পছন্দ করেন না।
যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ অবশ্য জানিয়েছে, তারা মনে করে আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী অ্যাব্রেগো গার্সিয়াকে ফিরিয়ে আনার বিষয়টি তাদের ‘বৈদেশিক সম্পর্ক’-এর অন্তর্ভুক্ত, যা আদালতের এখতিয়ারের বাইরে। এর আগে, মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনকে অ্যাব্রেগো গার্সিয়াকে ফিরিয়ে আনতে ‘সহায়তা’ করার নির্দেশ দেয়।
যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, অ্যাব্রেগো গার্সিয়া এমএস-১৩ গ্যাংয়ের সদস্য। এই গ্যাং একটি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত। তাই তাকে ফিরিয়ে আনা হলে তা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। অন্যদিকে, এল সালভাদরের প্রেসিডেন্ট বুকেলের দাবি, তিনি এই বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নিতে পারবেন না।
বিষয়টি নিয়ে আইনি জটিলতাও তৈরি হয়েছে। একজন ফেডারেল বিচারক, পাওলা জিক্সিস, প্রশাসনকে অ্যাব্রেগো গার্সিয়ার অবস্থান এবং পরিস্থিতি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। তবে এখনো পর্যন্ত এই নির্দেশের বাস্তবায়ন হয়নি। এই পরিস্থিতিতে, উভয় দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক আরও কঠিন হয়ে উঠেছে।
বর্তমানে, অ্যাব্রেগো গার্সিয়া এল সালভাদরের একটি কারাগারে বন্দী রয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে তাকে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসেনি। এই ঘটনার জেরে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ছে, যা ভবিষ্যতে আরও জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান