মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন আদালতকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে একটি সংবাদ সম্মেলনে অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) সাংবাদিকদের প্রবেশ করতে দেয়নি। সোমবার, যখন যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালত নির্দেশ দেয় যে, সংবাদ সংস্থাটিকে তাদের সম্পাদকীয় সিদ্ধান্তের জন্য শাস্তি দেওয়া যাবে না।
গত সপ্তাহে ফেডারেল আদালতের একটি সিদ্ধান্ত আসে, যেখানে ট্রাম্প প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয় যে তারা যেন এপিকে মেক্সিকো উপসাগরের নাম পরিবর্তন করতে বাধ্য না করে। প্রশাসন এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করেছে এবং আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত কোনো পরিবর্তন করার প্রয়োজন আছে কিনা, তা নিয়ে সংবাদ সংস্থার সঙ্গে বিতর্কে লিপ্ত রয়েছে।
আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও, সোমবার ওভাল অফিসে ট্রাম্প এবং এল সালভাদরের প্রেসিডেন্ট নায়েব বুকেলে-র সঙ্গে একটি সংবাদ সম্মেলনে এপির একজন সাংবাদিক ও একজন চিত্রগ্রাহককে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। তবে পরে, ওহাইও স্টেটের চ্যাম্পিয়নশিপ ফুটবল দলের সম্মানে আয়োজিত সাউথ লনের একটি অনুষ্ঠানে এপির দুইজন চিত্রগ্রাহককে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়।
কিন্তু একজন টেক্সট রিপোর্টারকে সেখানেও ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময় থেকে, এপির সাংবাদিক ও চিত্রগ্রাহকদের ওভাল অফিসের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে, যেখানে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রায়শই সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন, এবং এয়ার ফোর্স ওয়ানে প্রবেশ করতে বাধা দেওয়া হচ্ছে।
এপি নিয়মিতভাবে হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিটের ব্রিফিংগুলি কভার করে। উল্লেখ্য, লেভিট হলেন সেই তিনজন প্রশাসনিক কর্মকর্তার একজন, যাদের বিরুদ্ধে এপি মামলা করেছে।
মূলত, এই বিতর্কের সূত্রপাত হয় এপির একটি সিদ্ধান্তের কারণে। ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশে মেক্সিকো উপসাগরের নাম পরিবর্তন করার কথা বলা হলেও এপি তা মানতে রাজি হয়নি। যদিও এপির স্টাইল অনুযায়ী, ট্রাম্পের ইচ্ছাকে সম্মান জানিয়ে এটিকে “গভ অফ আমেরিকা” বলার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
এপি যুক্তি দিয়েছিল – এবং মার্কিন জেলা জজ ট্রেভর এন. ম্যাকফ্যাডেন গত সপ্তাহে এর সঙ্গে একমত হয়েছিলেন – সরকার সংবাদ সংস্থাকে তাদের মত প্রকাশের অধিকার প্রয়োগের জন্য শাস্তি দিতে পারে না।
এপি’র মুখপাত্র লরেন ইস্টন সোমবার বলেন, “আমরা আশা করছি হোয়াইট হাউস আজকের মধ্যেই (হোয়াইট হাউস প্রেস) পুল-এ এপির অংশগ্রহণ পুনরুদ্ধার করবে, যেমনটা ইনজাংশন অর্ডারে বলা হয়েছে।”
আদালতের এই সিদ্ধান্তের পরেও এপির ভবিষ্যৎ প্রবেশাধিকার কতটা সুনিশ্চিত, তা এখনও স্পষ্ট নয়। ম্যাকফ্যাডেন অবশ্য এমন কোনো নির্দেশ দেননি যে, এপির প্রবেশাধিকার পুনরুদ্ধার করতে হবে।
তবে তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, কোনো সংবাদ সংস্থাকে শুধুমাত্র তাদের সংবাদ সিদ্ধান্তের কারণে প্রবেশ থেকে বিরত রাখা যাবে না। এই নীতিটিকে “দৃষ্টিভঙ্গির বৈষম্য” হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
আদালতে পেশ করা নথিতে, প্রশাসন যুক্তি দিয়েছিল, “যুক্তরাষ্ট্রের আর কোনো সংবাদ সংস্থা এপি’র মতো এত বেশি প্রবেশাধিকার পায় না। এপি হয়তো তাদের এই বিশেষ সুবিধা উপভোগ করতে অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছিল, কিন্তু সংবিধান এই সুবিধা চিরকাল বজায় রাখতে বাধ্য করে না।”
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস