মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করা একজন এল সালভাদরীয় নাগরিক কিলমার আরমান্দো আব্রেগো গার্সিয়াকে বিতর্কিতভাবে তার দেশে ফেরত পাঠানোর ঘটনা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালত তাকে ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দিলেও, এর মধ্যে নানা জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে।
২০১৯ সালে, অভিবাসন বিষয়ক এক শুনানিতে কর্মকর্তাদের কাছে অভিযোগ আসে যে, গার্সিয়া এমএস-১৩ নামক একটি কুখ্যাত গ্যাংয়ের সদস্য। এরপর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে, তার আইনজীবীরা শুরু থেকেই এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন এবং তাদের দাবি, এটি মিথ্যা।
আদালতে শুনানির সময় গার্সিয়ার জামিন আবেদন নাকচ করা হয়। আদালত জানায়, তিনি সমাজের জন্য বিপদজনক হতে পারেন। যদিও এর অর্থ এই নয় যে, তিনি গ্যাংয়ের সদস্য ছিলেন, বরং তিনি জামিনের শর্ত পূরণ করতে পারেননি। পরবর্তীতে, গার্সিয়াকে অপসারণের বিরুদ্ধে সুরক্ষা দেওয়া হয়। এই সুরক্ষা পাওয়ার অর্থ হলো, যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা বিভাগের কর্মকর্তাদের সিদ্ধান্ত নিতে হতো যে গার্সিয়া যুক্তরাষ্ট্রের জন্য কোনো হুমকি নন।
কিন্তু সম্প্রতি, মার্কিন সরকার গার্সিয়াকে এল সালভাদরে ফেরত পাঠায়। যদিও তার অপসারণের ওপর সুরক্ষা ছিল। এই ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের মধ্যে মতভেদ দেখা যায়। কেউ কেউ বলছেন, এটি ছিল একটি “ভুলবশত” ঘটনা, আবার কেউ বলছেন, এর পেছনে অন্য কোনো কারণ রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট এই বিষয়ে একটি রায় দেয়, যেখানে গার্সিয়াকে এল সালভাদর থেকে ফিরিয়ে আনার জন্য সরকারকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়। আদালত জানায়, গার্সিয়ার বিষয়টি এমনভাবে দেখা হোক, যেন তাকে ভুলভাবে এল সালভাদরে পাঠানো না হতো।
এল সালভাদরের প্রেসিডেন্ট নাইয়িব বুকেলে এই বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে বলেন, গার্সিয়াকে ফেরত পাঠানো হলে তা হবে “সন্ত্রাসীকে যুক্তরাষ্ট্রে পাচার” করার মতো। তবে, গার্সিয়া যে সন্ত্রাসী, তার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
বর্তমানে, গার্সিয়া এল সালভাদরের একটি কারাগারে আটক আছেন। তাকে সেখানে রাখা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধে, কারণ তিনি এল সালভাদরে কোনো অপরাধ করেননি। এই পরিস্থিতিতে, প্রশ্ন উঠেছে, গার্সিয়াকে কি মুক্তি দেওয়া হবে, নাকি তাকে আবার যুক্তরাষ্ট্রে ফিরিয়ে আনা হবে?
বিষয়টি নিয়ে এখনো অনেক ধোঁয়াশা রয়েছে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোতে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা