জো বাইডেনের অবসর জীবন: প্রত্যাশা ও বাস্তবতার এক চিত্র। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ক্ষমতা ছাড়ার পর এখন কেমন দিন কাটাচ্ছেন, তা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে নানা আলোচনা।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের উত্তরসূরি হিসেবে বাইডেন যখন হোয়াইট হাউস ত্যাগ করেন, তখন অনেকেই ভেবেছিলেন তিনি হয়তো অনেকটা নিভৃত জীবন বেছে নেবেন। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে ভিন্ন চিত্র।
জনগণের মাঝে পুনরায় সক্রিয় হওয়ার জন্য বাইডেন ধীরে ধীরে প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
খুব শীঘ্রই বাইডেনকে দেখা যাবে একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক লড়াইয়ে। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি রক্ষার বিষয়ে তিনি জনসম্মুখে কথা বলবেন, যা মূলত প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নীতির বিরুদ্ধে একটি অবস্থান।
অনেকেই মনে করছেন, বাইডেনের এই পদক্ষেপ দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন মেরুকরণ সৃষ্টি করবে।
বাইডেনের ঘনিষ্ঠজনদের মতে, এই সময়টা তাঁর জন্য ‘পুনরায় সংযোগ স্থাপন, নতুন করে গোছানো এবং আত্ম-অনুসন্ধানের’। পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানো, পুরনো বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করা, অথবা পছন্দের সিনেমা ও বইয়ের জগৎ, সবকিছুতেই যেন তিনি নতুন করে ফিরছেন।
সম্প্রতি ব্রডওয়েতে ‘ওথেলো’ নাটকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেও তিনি উপস্থিত ছিলেন।
নিজের ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা নিয়েও কাজ করছেন বাইডেন। একটি বই লেখার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি, যেখানে তাঁর জীবনের নানা দিক তুলে ধরা হবে।
এছাড়াও, ইসরায়েলের মুক্তিপ্রাপ্ত জিম্মিদের সঙ্গে এবং অন্যান্য পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে তিনি নিয়মিত কথা বলছেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বাইডেন সাধারণত ক্ষমতা ছাড়ার পর দ্রুত জনসম্মুখে আসেন না। তবে এবার তিনি অপেক্ষাকৃত দ্রুতই সক্রিয় হচ্ছেন।
এর কারণ হতে পারে ট্রাম্পের বিভিন্ন নীতি, যার মোকাবিলায় বাইডেনকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হতে পারে।
বাইডেন প্রশাসনের প্রাক্তন কর্মকর্তারা মনে করেন, বাইডেন পুনরায় সক্রিয় হওয়ায় দলের মধ্যে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। দলের অনেক নেতাই মনে করেন, বাইডেনের অভিজ্ঞতা এবং নেতৃত্ব তাঁদের জন্য সহায়ক হবে।
অন্যদিকে, বাইডেনের অনুসারীদের মধ্যে অনেকেই তাঁর ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা নিয়ে দ্বিধাগ্রস্ত। একটি রাজনৈতিক লাইব্রেরি ও ফাউন্ডেশন তৈরির পরিকল্পনা এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে।
অনুদান এর ক্ষেত্রেও কিছু সমস্যা দেখা যাচ্ছে। অনেক অনুদানকারী বাইডেনের প্রতি সমর্থন জানালেও ট্রাম্পের সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়ার ভয়ে তাঁরা প্রকাশ্যে আসতে ভয় পাচ্ছেন।
বাইডেনের ঘনিষ্ঠ কিছু ডেমোক্রেট নেতা মনে করেন, বাইডেনের এই সক্রিয়তা দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তাঁরা বাইডেনের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে দলের সাংগঠনিক কাঠামোকে শক্তিশালী করতে চান।
বর্তমানে বাইডেন ডেলওয়্যারে তাঁর বাড়িতেই বেশি সময় কাটাচ্ছেন। তবে মাঝে মাঝে তিনি ওয়াশিংটনে তাঁর অফিসে যান, সম্ভবত সেখানে তাঁর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হয়।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বাইডেনের এই প্রত্যাবর্তন আমেরিকার রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন এক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। তাঁর এই পদক্ষেপ কতটা সফল হবে, এখন সেটাই দেখার বিষয়।
তথ্য সূত্র: সিএনএন।