পাকিস্তানের পক্ষ থেকে আফগান নাগরিকদের বিতাড়ন প্রক্রিয়া জোরদার করা হয়েছে, এমনটাই জানাচ্ছে জাতিসংঘের অভিবাসন বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা (আইওএম)। এপ্রিল মাসের শুরু থেকে প্রায় ৬০ হাজার আফগান নাগরিককে সীমান্ত পার করে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের নির্দেশে, পাকিস্তান সরকার তাদের দেশে বসবাস করা প্রায় ৩০ লক্ষ আফগান নাগরিককে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অক্টোবর মাসে এই ঘোষণা আসার পর থেকেই বিতাড়ন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আইওএম জানিয়েছে, তারা ইতোমধ্যে পাকিস্তান ও ইরান থেকে ফেরত আসা দশ লক্ষেরও বেশি মানুষকে সহায়তা করেছে।
সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, বিতাড়ন প্রক্রিয়ার দ্বিতীয় পর্যায়ে জোরপূর্বক প্রত্যাবর্তনের সংখ্যা বেড়েছে। ১লা এপ্রিল থেকে ১৩ই এপ্রিলের মধ্যে, প্রায় ৬০ হাজার আফগান নাগরিক তোরখাম ও স্পিন বোলডাক সীমান্ত দিয়ে আফগানিস্তানে প্রবেশ করেছেন।
পাকিস্তানের দিক থেকে এখন ব্যাপক হারে প্রত্যাবর্তনের ফলে সীমান্তে এবং প্রত্যাবর্তনের স্থানগুলোতে জরুরি চাহিদা বাড়ছে। কারণ বিপুল সংখ্যক মানুষকে জায়গা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।”
গত মার্চ মাসে, পাকিস্তান সরকার আফগান সিটিজেন কার্ড (ACC) রয়েছে এমন প্রায় আট লক্ষ মানুষকে এপ্রিলের শুরুতেই দেশ ছাড়ার সময়সীমা বেঁধে দেয়।
২০২৩ সালে যখন হাজার হাজার আফগান নাগরিককে বিতাড়িত করার হুমকি দেওয়া হয়েছিল, সেই সময়ের মতোই, পরিবারগুলো তাদের জিনিসপত্র নিয়ে উত্তর-পশ্চিমের তোরখাম এবং দক্ষিণের স্পিন বোলডাক সীমান্ত ক্রসিংগুলোতে ভিড় জমাচ্ছে। এদের অনেকেই কয়েক দশক ধরে পাকিস্তানে বসবাস করছিলেন, যুদ্ধ এবং ২০২১ সালে তালেবান ক্ষমতা দখলের পর তারা উদ্বাস্তু হয়ে সেখানে আশ্রয় নিয়েছিলেন।
পাকিস্তানের বিভিন্ন স্থানে সশস্ত্র হামলার ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এই বিতাড়ন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। পাকিস্তান সরকার এর জন্য আফগানিস্তানে ঘাঁটি গেড়ে থাকা গোষ্ঠীগুলোকে দায়ী করছে। যদিও তালেবান সরকার এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে।
বিতাড়িত হতে যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন আফগান সাংবাদিক ফ্রেসতা সাদিদ। শরণার্থীদের জন্য গঠিত জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটি জানিয়েছে, সাদিদের বৈধভাবে দেশ ছাড়ার অনুমতি রয়েছে। তারা সাদিদকে রক্ষা করার জন্য জরুরি পদক্ষেপের আহ্বান জানাচ্ছে, কারণ তিনি সম্ভবত তালেবানের ‘নিহতদের তালিকায়’ রয়েছেন।
উল্লেখ্য, জাতিসংঘ শরণার্থী বিষয়ক ১৯৫১ সালের কনভেনশনে পাকিস্তান স্বাক্ষরকারী দেশ নয়। এছাড়াও, শরণার্থীদের অধিকার রক্ষার জন্য পাকিস্তানে কোনো উপযুক্ত আইনও নেই।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা