বিখ্যাত অভিনেতা জিন হ্যাকম্যান এবং তাঁর স্ত্রী বেটসি আরাকাওয়ার মৃত্যুর পর, তাঁদের নিউ মেক্সিকোর বাড়িতে স্বাস্থ্যকর্মীরা একটি মূল্যায়ন চালান। মূল্যায়নে জানা যায়, তাঁদের বাড়ির বাইরের কিছু অংশে ইঁদুরের উপদ্রব ছিল।
এর পরেই উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়ায় হান্তাভাইরাস। বেটসি আরাকাওয়া এই বিরল ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।
নিউ মেক্সিকো জনস্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, হ্যাকম্যান দম্পতির সম্পত্তির আটটি আলাদা ভবনে মৃত ইঁদুর ও ইঁদুরের বাসা খুঁজে পাওয়া গেছে। এই মূল্যায়নটি করা হয়েছিল মার্চ মাসে, যখন ফেব্রুয়ারিতে হ্যাকম্যান ও তাঁর স্ত্রীকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।
বেটসি আরাকাওয়া হান্তাভাইরাস পালমোনারি সিন্ড্রোমে (Hantavirus Pulmonary Syndrome) আক্রান্ত হয়ে মারা যান। এটি একটি বিরল রোগ, যা মানুষ ইঁদুরের সংস্পর্শে এলে বা তাদের মল, লালা বা প্রস্রাবের মাধ্যমে আক্রান্ত হতে পারে।
তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৫ বছর।
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, তিনটি গ্যারেজ, দুটি ছোট বাড়ি এবং তিনটি শেডে ইঁদুরের মল পাওয়া গেছে। তিনটি গ্যারেজে একটি জীবিত ইঁদুর, একটি মৃত ইঁদুর এবং একটি ইঁদুরের বাসা পাওয়া যায়।
নিউ মেক্সিকো রাজ্যের জনস্বাস্থ্য ভেটেরিনারিয়ান এরিন ফিপস জানান, প্রথম সারির স্বাস্থ্যকর্মী এবং পরিবারের সদস্যদের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে এই মূল্যায়ন করা হয়েছিল। মূল বাসস্থানে ইঁদুরের উপদ্রবের তেমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি এবং সেটি পরিষ্কার ছিল।
তবে, অন্যান্য আটটি ভবনে ইঁদুরের আনাগোনা ছিল। এমনকি, বাড়ির দুটি গাড়িতেও ইঁদুরের উপস্থিতি, বাসা এবং মল দেখা গেছে।
হান্তাভাইরাস একটি মারাত্মক রোগ। নিউ মেক্সিকোতে এই ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে প্রায় ৪১ শতাংশের মৃত্যু হয়েছে।
মায়ো ক্লিনিক (Mayo Clinic) পরামর্শ দিয়েছে, ইঁদুরের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলতে হবে এবং ইঁদুরের আবাসস্থল পরিষ্কার করার সময় সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। কারণ, এই রোগের তেমন কোনো চিকিৎসা নেই।
রোগের প্রাথমিক পর্যায়ে ফ্লুর মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে এবং এই লক্ষণগুলি প্রকাশ পেতে প্রায় দুই মাস পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, বেটসি আরাকাওয়ার মৃত্যু হয় হান্তাভাইরাসের কারণে, যেখানে হ্যাকম্যানের মৃত্যু হয় হৃদরোগ এবং আলঝেইমার্স-এর মতো স্বাস্থ্য জটিলতার কারণে।
তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৫ বছর।
এই ঘটনা আমাদের জন্য একটি সতর্কবার্তা। আমাদের চারপাশে ইঁদুরের উপদ্রব হলে, তা থেকে বিভিন্ন রোগ সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে।
তাই, আমাদের সবারই সচেতন থাকা উচিত এবং প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
তথ্য সূত্র: CNN