যুদ্ধবিরতির পরও লেবাননে ইসরায়েলের বোমা, নিহত ৭২!

লেবাননে যুদ্ধবিরতির পর ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৭১ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছে। মঙ্গলবার জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার অফিসের (OHCHR) মুখপাত্র থামিন আল-খিতান এই তথ্য জানান।

খিতান বলেন, নিহতদের মধ্যে ১৪ জন নারী এবং ৯ জন শিশু রয়েছে। তিনি বেসামরিক নাগরিকদের হত্যার ঘটনাগুলোর তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন। বিশেষ করে, বেসামরিক অবকাঠামোতে আঘাত হানার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।

এর মধ্যে গত ৩ এপ্রিল নাকুরা শহরে ইসলামিক স্বাস্থ্য সোসাইটি কর্তৃক পরিচালিত একটি নতুন মেডিকেল সেন্টার ধ্বংসের ঘটনাও রয়েছে।

জাতিসংঘের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ইসরায়েলের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, লেবানন থেকে উত্তর ইসরায়েলের দিকে অন্তত পাঁচটি রকেট, দুটি মর্টার এবং একটি ড্রোন ছোড়া হয়েছে। এছাড়া, ইসরায়েলের হাজার হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

খিতান আরও বলেন, “যুদ্ধবিরতি অবশ্যই কার্যকর রাখতে হবে। লেবানন, ইসরায়েল এবং পুরো অঞ্চলে স্থিতিশীলতার জন্য যেকোনো ধরনের উত্তেজনা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।”

মঙ্গলবার পরে, লেবাননের জনস্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, ঐদিন আইতারুন শহরে ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় একজন নিহত এবং তিনজন আহত হয়েছে, যাদের মধ্যে একটি শিশুও ছিল।

নভেম্বরের ২৭ তারিখ থেকে যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পরেও ইসরায়েল রাজধানী বৈরুতসহ লেবাননে হামলা অব্যাহত রেখেছে। মূলত, গত বছরের শেষের দিকে ইসরায়েল এবং সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর মধ্যে এক বছরের বেশি সময় ধরে চলা সংঘর্ষের অবসান ঘটাতে এই যুদ্ধবিরতি হয়। যদিও এর আগে দুই মাস ধরে উভয়পক্ষের মধ্যে ব্যাপক যুদ্ধ চলেছিল।

যুদ্ধবিরতির শর্ত অনুযায়ী, হিজবুল্লাহকে লেবাননের লিতানি নদীর দক্ষিণ দিক থেকে তাদের যোদ্ধা সরাতে এবং সামরিক অবকাঠামো ধ্বংস করতে বলা হয়েছিল। অন্যদিকে, ইসরায়েলকে দক্ষিণ লেবানন থেকে তাদের সকল সেনা সরিয়ে নিতে বলা হয়।

বর্তমানে, লেবাননের সেনাবাহিনী ইসরায়েল সীমান্তের কাছে দক্ষিণ দিকে মোতায়েন রয়েছে। যদিও ইসরায়েল এখনো লেবাননের পাঁচটি সুরক্ষিত স্থানে তাদের নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখেছে, যা তারা কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ মনে করে।

লেবাননের প্রেসিডেন্ট জোসেফ আউন সোমবার আল জাজিরাকে জানান, সেনাবাহিনী লিতানির দক্ষিণে “হিজবুল্লাহর কোনো বাধা ছাড়াই” টানেল ও অস্ত্রাগার ধ্বংস করছে এবং অস্ত্রের ঘাঁটিগুলো বাজেয়াপ্ত করছে।

বৃহস্পতিবার, হিজবুল্লাহর একজন শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা রয়টার্স নিউজ এজেন্সিকে জানান, যদি ইসরায়েল দক্ষিণ লেবানন থেকে সেনা প্রত্যাহার করে এবং হামলা বন্ধ করে, তাহলে তারা লেবাননের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তাদের অস্ত্র নিয়ে আলোচনা করতে প্রস্তুত।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *