**গভীর সমুদ্রে প্রথমবারের মতো ক্যামেরাবন্দী বিশাল স্কুইড: বিজ্ঞানীদের বিস্ময়**
পৃথিবীর গভীর সমুদ্রে লুকিয়ে থাকা এক রহস্যময় প্রাণী, বিশাল স্কুইড। প্রথমবারের মতো, বিজ্ঞানীরা এই দুর্লভ প্রাণীকে তার নিজস্ব পরিবেশে ক্যামেরাবন্দী করতে সক্ষম হয়েছেন।
আটলান্টিক মহাসাগরের গভীরে, প্রায় ৬০০ মিটার নিচে, যুক্তরাষ্ট্রের ‘শমিট ওশান ইনস্টিটিউট’-এর গবেষণা জাহাজ ‘ফাল্কর (টু)’ -এর ডুবোজাহাজ ‘সুব্যাস্টেইন’-এর ক্যামেরায় ধরা পড়েছে এই বিরল দৃশ্য।
বিশাল স্কুইড, যাদের ‘গ্লাস স্কুইড’ও বলা হয়, এদের সম্পর্কে এতদিন পর্যন্ত যা জানা ছিল, তার বেশিরভাগই এসেছে মৃতদেহ থেকে।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এই স্কুইডগুলো লম্বায় প্রায় ২৩ ফুট পর্যন্ত হতে পারে এবং ওজন হতে পারে প্রায় ৫০০ কেজির মতো। তবে ক্যামেরায় ধরা পড়া স্কুইডটি ছিলো অপেক্ষাকৃত ছোট, সম্ভবত একটি কিশোরী স্কুইড।
বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, এই বয়সের স্কুইডগুলো সমুদ্রের আরও অগভীর অঞ্চলে বিচরণ করে।
এই আবিষ্কারের ফলে বিশাল স্কুইডের জীবনযাত্রা এবং আচরণ সম্পর্কে নতুন করে গবেষণা করার সুযোগ তৈরি হয়েছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, গভীর সমুদ্রের এই প্রাণীগুলো কীভাবে শিকার করে, কীভাবে নিজেদের শিকারীদের থেকে বাঁচায়, সে সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানা যাবে।
স্কুইডগুলোর শরীরে থাকা ক্রোমাটোফোর নামক বিশেষ কোষের কারণে এরা নিজেদের চারপাশের পরিবেশের সাথে মানানসই রঙ পরিবর্তন করতে পারে, যা তাদের শিকার এবং আত্মরক্ষায় সাহায্য করে।
গবেষকরা জানিয়েছেন, এই অভিযানে শুধুমাত্র বিশাল স্কুইড নয়, আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার হয়েছে।
হিমবাহ এলাকার গ্লাস স্কুইড (*Galiteuthis glacialis*) -এর ছবিও প্রথমবার তাদের স্বাভাবিক পরিবেশে ধারণ করা হয়েছে।
এই দুটি আবিষ্কার সমুদ্রবিজ্ঞানের ইতিহাসে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। গভীর সমুদ্র সম্পর্কে আমাদের ধারণা এখনও অনেক সীমিত, তাই এই ধরনের আবিষ্কারগুলো আমাদের সমুদ্র এবং এর বাসিন্দাদের সম্পর্কে আরও ভালোভাবে জানতে সাহায্য করে।
এই আবিষ্কার প্রমাণ করে, গভীর সমুদ্রের জগৎ আমাদের ধারণার চেয়ে অনেক বেশি বৈচিত্র্যময় এবং সুন্দর।
বিজ্ঞানীরা আশা করছেন, ভবিষ্যতে এই ধরনের আরও গবেষণা গভীর সমুদ্রের রহস্য উন্মোচনে সাহায্য করবে এবং সমুদ্র বিষয়ক জ্ঞানের ভাণ্ডারকে আরও সমৃদ্ধ করবে।
তথ্য সূত্র: ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক