গভর্নমেন্ট চিজ: অর্থহীনতার ভিড়ে ডেভিড ওওলোয়োর অভিনয়!

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেক্ষাপটে নির্মিত নতুন একটি টিভি সিরিজ ‘গভর্নমেন্ট চিজ’-এর আলোচনা নিয়ে হাজির হয়েছি আমরা। এই সিরিজে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন ডেভিড ওওলোও। অ্যাপল টিভি প্লাস-এ মুক্তি পাওয়া এই সিরিজটির গল্পে রয়েছে কিছু ভিন্নতা, তবে সমালোচকদের মতে, গল্প বলার ধরনে দুর্বলতা রয়েছে।

১৯৬৯ সালের ক্যালিফোর্নিয়ার সান ফার্নান্দো ভ্যালিতে গল্পের প্রেক্ষাপট তৈরি করা হয়েছে। গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র হ্যাম্পটন চেম্বারস, যিনি এক সময় ছিলেন একজন সামান্য চোর এবং প্রতারক।

জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার পর তিনি নিজের পুরোনো শহরে ফিরে আসেন। তার লক্ষ্য থাকে একটি স্ব-ধারালো (self-sharpening) ড্রিল আবিষ্কারের মাধ্যমে নতুন করে জীবন শুরু করা।

এই ড্রিলের উপার্জিত অর্থ দিয়ে তিনি পরিবারকে সাহায্য করতে চান। কিন্তু তার স্ত্রী এবং ছেলেরা তার উপর অসন্তুষ্ট। দ্রুত অর্থ উপার্জনের জন্য হ্যাম্পটনকে আবারও অপরাধের পথে যেতে হয়, যা তার ভালোবাসার মানুষদের সঙ্গে দূরত্ব আরও বাড়িয়ে দেয়।

সিরিজটির দৃশ্যধারণ খুবই আকর্ষণীয়। ১৯৬৯ সালের আমেরিকার সংস্কৃতি, পোশাক, গাড়ি, টেলিফোন এবং আসবাবপত্র – সবকিছুই দর্শকদের মুগ্ধ করে। এই দিক থেকে দেখলে, নির্মাতা পল হান্টার তাঁর কাজে সফল।

তবে, গল্পের গভীরতার অভাবে সিরিজটি যেন আকর্ষণীয় মোড়কে মোড়া হলেও, ভেতরের স্বাদ তেমন পাওয়া যায় না। চরিত্রগুলোর মধ্যে গভীর সম্পর্কের অভাব এবং ঘটনার ঘনঘটা দর্শককে কিছুটা হতাশ করতে পারে।

ডেভিড ওওলোও-এর অভিনয় প্রশংসার যোগ্য। তিনি হ্যাম্পটনের চরিত্রে দারুণভাবে নিজেকে ফুটিয়ে তুলেছেন। তার মুখের অভিব্যক্তি এবং অভিনয় দর্শককে গল্পের সঙ্গে জুড়ে রাখে।

তবে, দুর্বল চিত্রনাট্যের কারণে তার অসাধারণ অভিনয়ও যেন পরিপূর্ণতা পায় না। সিরিজের দুর্বলতা হলো, ঘটনার ঘনঘটা এবং অপ্রত্যাশিত মোড় গল্পের গভীরতাকে ছাপিয়ে যায়।

সিরিজটির শিরোনাম ‘গভর্নমেন্ট চিজ’-এর একটি বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় থেকে মার্কিন সরকার দরিদ্রদের মধ্যে যে প্রক্রিয়াজাত পনির বিতরণ করত, সেই বিষয়টি এখানে তুলে ধরা হয়েছে।

হ্যাম্পটনের স্ত্রী অ্যাস্টোরিয়া একটি দৃশ্যে বলেন, হ্যাম্পটন তার মায়ের কাছ থেকে এই উদ্ভাবনী ক্ষমতা পেয়েছেন, যিনি ‘গভর্নমেন্ট চিজ’ এবং সাদা রুটি দিয়ে সেরা স্যান্ডউইচ তৈরি করতেন।

সব মিলিয়ে, ‘গভর্নমেন্ট চিজ’ -এর গল্প বলার ধরনে কিছু দুর্বলতা রয়েছে। আকর্ষণীয় দৃশ্য এবং ডেভিড ওওলোও-এর অসাধারণ অভিনয় সত্ত্বেও, গল্পটি দর্শকদের প্রত্যাশা পূরণ করতে ব্যর্থ হতে পারে।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *