ভয়ঙ্কর! সাবেক প্রেসিডেন্টকে ১৫ বছরের কারাদণ্ড!

পেরুর সাবেক রাষ্ট্রপতি ওলান্তা উমালা এবং তাঁর স্ত্রী নাদিন হেরেদিয়াকে অর্থ পাচারের দায়ে ১৫ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে দেশটির একটি আদালত। মঙ্গলবার এই রায় ঘোষণার পর উমালাকে হেফাজতে নেওয়া হয়।

অন্যদিকে, তাঁর স্ত্রী ব্রাজিলের দূতাবাসে রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়েছেন এবং ছোট ছেলের সঙ্গে তিনি ব্রাজিল যাওয়ার অনুমতি পেয়েছেন।

আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, উমালা এবং তাঁর স্ত্রী ব্রাজিলের নির্মাণ সংস্থা ওডেব্রেখট থেকে পাওয়া প্রায় ৩০ লক্ষ মার্কিন ডলার এবং তৎকালীন ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট হুগো চাভেজের সরকার থেকে পাওয়া ২ লক্ষ মার্কিন ডলার পাচারের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০১১ সালে উমালার নির্বাচনী প্রচারের সময় এই অর্থ নেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ।

উমালার ন্যাশনালিস্ট পার্টি এই অর্থ গ্রহণ করেছিল।

মামলার শুনানিতে উমালা তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করারও ঘোষণা দিয়েছেন।

পেরুর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নাদিন হেরেদিয়াকে ব্রাজিলে যাওয়ার জন্য নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, ওলান্তা উমালা ২০১১ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত পেরুর প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে পেরুর সাবেক প্রেসিডেন্ট আলেহান্দ্রো টোলেডো এবং পেদ্রো কাস্টিলোর মতো কারাবন্দী নেতাদের রাখার জন্য বিশেষভাবে তৈরি একটি পুলিশ ঘাঁটিতেই সম্ভবত উমালাকে রাখা হবে।

এর আগে, ২০১৬ সালে ওডেব্রেখট বিদেশি নেতা ও কর্মকর্তাদের ঘুষ দেওয়ার জন্য অভিযুক্ত হয়। এই ঘটনার জেরে তারা ব্রাজিল, যুক্তরাষ্ট্র এবং সুইজারল্যান্ডে প্রায় ৩.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার জরিমানা দিতে রাজি হয়েছিল।

আরেক সাবেক প্রেসিডেন্ট, অ্যালান গার্সিয়া, ওডেব্রেখটের সঙ্গে যুক্ত দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত হওয়ার পর ২০১৯ সালে পুলিশের গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির সময় নিজের বাড়িতে আত্মহত্যা করেছিলেন। এছাড়া, ২০২০ সালে সাবেক প্রেসিডেন্ট আলেহান্দ্রো টোলেডোকে সরকারি কাজের বিনিময়ে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে ২০ বছরের বেশি কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

পেদ্রো কাস্টিলোকে ২০২২ সালে কংগ্রেস ভেঙে দেওয়ার ব্যর্থ চেষ্টার কারণে বিদ্রোহের অভিযোগে আটক করা হয়েছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই রায় পেরুর রাজনৈতিক অঙ্গনে সুশাসনের গুরুত্বকে আরও একবার সামনে নিয়ে এসেছে। একই সঙ্গে, দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের বিরুদ্ধে কঠোর বার্তা দিয়েছে এই আদালত।

বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোতেও স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *