ডালাস ম্যাভেরিকস-এর মালিক মিরিয়াম অ্যাডেলসন: বিতর্ক আর সমালোচনার কেন্দ্রে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাস্কেটবল জগতে, বিশেষ করে এনবিএ (NBA)-তে প্রায়ই দেখা যায় প্রভাবশালী মালিকদের ক্ষমতা এবং তাদের নেওয়া কিছু সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে বিতর্ক দানা বাঁধে।
সম্প্রতি, ডালাস ম্যাভেরিকস-এর মালিক মিরিয়াম অ্যাডেলসনকে ঘিরে তৈরি হয়েছে এমনই এক পরিস্থিতি। তার কিছু পদক্ষেপ একদিকে যেমন দলের পারফরম্যান্সে প্রভাব ফেলেছে, তেমনই হতাশ করেছে অনেক ভক্তকে।
মিরিয়াম অ্যাডেলসন ক্যাসিনো ব্যবসায়ী শেলডন অ্যাডেলসনের বিধবা। তিনি প্রায় ২৭ বিলিয়ন ডলারের মালিক, যা তাকে বিশ্বের অন্যতম ধনী নারীদের একজন করেছে।
২০২৩ সালের শেষের দিকে, তিনি প্রায় ৩.৫ বিলিয়ন ডলারে মার্ক কুবান-এর কাছ থেকে ডালাস ম্যাভেরিকস-এর মালিকানা গ্রহণ করেন। এরপর থেকেই দলের ব্যবস্থাপনায় আসে বেশ কিছু পরিবর্তন, যা অনেক ভক্তের মনে ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে।
সবচেয়ে বড় বিতর্ক তৈরি হয়েছে দলের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় লুকা ডনচিচ-কে নিয়ে। অনেকে মনে করেন, ডনচিচ-কে দল থেকে সরিয়ে দেওয়াটা ছিল একটি ভুল সিদ্ধান্ত।
ডনচিচ-এর দল ছাড়ার পর ম্যাভেরিকস-এর খেলায়ও এর প্রভাব পড়েছে। এমনকি, অনেক সমর্থক দলের কর্মকর্তাদের অপসারণের দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও তারা তাদের অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।
আরেকটি বিষয় যা ভক্তদের মধ্যে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে তা হলো টিকিটের মূল্যবৃদ্ধি। নতুন মালিকানা আসার পর ২০২৩-২৪ মৌসুমের জন্য টিকিটের দাম গড়ে ৮ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে, যা কিছু ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে।
মিরিয়াম অ্যাডেলসনের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতাও অনেককে হতাশ করেছে। তিনি রিপাবলিকান দলের প্রভাবশালী নেতা এবং সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একজন বড় সমর্থক।
এমনকি, ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারের জন্য তিনি বিপুল পরিমাণ অর্থও দান করেছেন। এই বিষয়গুলো অনেক ভক্তের কাছে দলের মালিকের বিতর্কিত সিদ্ধান্তের প্রমাণ হিসেবে দেখা দিয়েছে।
খেলাধুলা এবং রাজনীতির এই মিশ্রণ নিয়ে বিভিন্ন মহলে আলোচনা চলছে। অনেক খেলোয়াড় বিভিন্ন সামাজিক ইস্যুতে তাদের মতামত প্রকাশ করেন, কিন্তু দলের মালিকদের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা নিয়ে আলোচনা তুলনামূলকভাবে কম হয়।
এক্ষেত্রে অ্যাডেলসনের রাজনৈতিক সমর্থন এবং দলের ব্যবস্থাপনায় তার প্রভাব নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তুলছেন।
ডালাস ম্যাভেরিকস-এর এই পরিস্থিতি এনবিএ-এর ইতিহাসে একটি নতুন দৃষ্টান্ত তৈরি করেছে। দলের মালিকের সিদ্ধান্ত কীভাবে একটি দলের ভবিষ্যৎ এবং ভক্তদের অনুভূতির ওপর প্রভাব ফেলতে পারে, অ্যাডেলসনের ঘটনা তারই প্রমাণ।
ভবিষ্যতে দলটির পারফরম্যান্স কেমন হয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
তথ্যসূত্র: The Guardian