জিম্বাবুয়েতে বিক্ষোভ: আশা ও হতাশার আগুনে জ্বলছে?

**জিম্বাবুয়ের রাজনৈতিক সংকট: আশা ও হতাশার চিত্র**

জিম্বাবুয়েতে রাজনৈতিক অস্থিরতা ক্রমশ বাড়ছে, যা দেশটির সাধারণ মানুষের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে। সম্প্রতি প্রেসিডেন্ট এমারসন এমনানগাওয়ার সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শনের ঘটনা ঘটেছে, যেখানে অনেক বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

অর্থনৈতিক দুরবস্থা, দুর্নীতি এবং রাজনৈতিক নিপীড়ন—এই বিষয়গুলো দেশটির জনগণের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে।

গত ৩১শে মার্চ, হারারের রাস্তায় বিক্ষোভকারীরা সমবেত হয়েছিল। বিক্ষোভের মূল কারণ ছিল প্রেসিডেন্ট এমনানগাওয়ার পদত্যাগ ও সরকারের পরিবর্তন।

বিক্ষোভের আহ্বান জানিয়েছিলেন জিম্বাবুয়ের ক্ষমতাসীন দল জানু-পিএফের সাবেক সদস্য। বিক্ষোভের কারণে অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও স্কুল বন্ধ ছিল, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তোলে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বিক্ষোভকারীরা মূলত দেশটির অর্থনৈতিক সংকট এবং সরকারের দুর্নীতি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, টাকার অবমূল্যায়ন এবং কর্মসংস্থানের অভাব—এগুলো জনগণের জীবনযাত্রাকে কঠিন করে তুলেছে।

অনেক জিম্বাবুয়াবাসী প্রতিবেশী দেশগুলোতে এবং ইউরোপে পাড়ি জমাতে বাধ্য হচ্ছেন, কারণ সেখানে তারা কাজের সুযোগ খুঁজে পাচ্ছেন।

এই পরিস্থিতিতে, বিরোধী দল সিটিজেনস কোয়ালিশন ফর চেঞ্জ (CCC) এর উত্থান কিছুটা আশার আলো দেখালেও, নির্বাচনগুলোতে সহিংসতার অভিযোগ উঠেছে।

বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর নিপীড়ন এবং ভোট কারচুপির অভিযোগও রয়েছে।

জিম্বাবুয়ের এই সংকট দীর্ঘদিনের। ১৯৮০ সালে স্বাধীনতা লাভের পর থেকে দেশটি অর্থনৈতিক সমস্যায় জর্জরিত।

বর্তমানে দেশটির মানুষ মৌলিক চাহিদাগুলো মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে। খাবার, জল এবং বিদ্যুতের অভাব সেখানে একটি নিয়মিত সমস্যা।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, জিম্বাবুয়েকে একটি নতুন নেতৃত্বের প্রয়োজন। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে এমনানগাওয়া স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করবেন কিনা, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।

অনেকের ধারণা, ক্ষমতাসীন দলের বাইরে থেকে কোনো নেতা আসা কঠিন।

এই পরিস্থিতিতে দেশটির সাধারণ মানুষ হতাশ। তারা মনে করেন, সরকারের দুর্নীতি এবং স্বজনপ্রীতি দেশের অগ্রগতির পথে বাধা।

সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীরা প্রায়ই সরকারি চুক্তি লাভ করে এবং এর ফলে জনগণের অর্থ অপচয় হয়।

জিম্বাবুয়ের বর্তমান পরিস্থিতি বাংলাদেশের অনেক মানুষের কাছে পরিচিত মনে হতে পারে। দুর্নীতি, রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং অর্থনৈতিক সংকট—এগুলো উন্নয়নশীল দেশগুলোতে প্রায়ই দেখা যায়।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *