পিঁপড়া পাচার: ৫ হাজার পিঁপড়াসহ গ্রেপ্তার, শিউরে ওঠা ঘটনা!

কেনিয়ার বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ বিভাগ সম্প্রতি কয়েকজন বিদেশিকে আটক করেছে, যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে দুর্লভ প্রজাতির পিঁপড়া পাচারের। এদের মধ্যে দুজন বেলজিয়ামের নাগরিক, যাদের কাছ থেকে প্রায় ৫,০০০ পিঁপড়া উদ্ধার করা হয়েছে।

একই ঘটনায় কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবিতে আরও দুজন—একজন কেনীয় এবং একজন ভিয়েতনামের নাগরিককেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

আটককৃত বেলজিয়ান নাগরিক লর্নয় ডেভিড এবং সেপ্পে লোডুইকক্স, দুজনেই ১৯ বছর বয়সী। তারা কেনিয়ার একটি গেস্ট হাউসে থাকাকালীন সময়ে বিপুল সংখ্যক পিঁপড়াসহ ধরা পড়েন।

জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানান, তারা শখের বশে পিঁপড়া সংগ্রহ করছিলেন। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া পিঁপড়াগুলো ২,২৪৪টি টেস্ট টিউবে রাখা ছিল, যাতে করে তারা মাসের পর মাস পর্যন্ত বাঁচতে পারে।

অন্যদিকে, নাইরোবিতে গ্রেপ্তারকৃত দুই ব্যক্তির কাছ থেকে প্রায় ৪০০টি পিঁপড়া পাওয়া গেছে।

কেনিয়ার বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ বিভাগের মতে, পাচারকারীরা ইউরোপ ও এশিয়ার বাজারে এই পিঁপড়াগুলো বিক্রি করার পরিকল্পনা করছিল। পাচার হওয়া পিঁপড়ার মধ্যে “মেসোর সেফালোটেস” নামক একটি বিশেষ প্রজাতির পিঁপড়া অন্তর্ভুক্ত ছিল, যা পূর্ব আফ্রিকার স্থানীয় প্রজাতি এবং আকারে বেশ বড় ও লাল রঙের হয়ে থাকে।

সংরক্ষণ বিভাগ আরও জানায়, বন্যপ্রাণী পাচারের এই ঘটনা নতুন একটি প্রবণতা নির্দেশ করে। আগে যেখানে হাতির দাঁত, গণ্ডারের শিং বা প্যাঙ্গোলিনের মতো বড় প্রাণীর অঙ্গ পাচার হতো, সেখানে এখন ছোট এবং কম পরিচিত প্রজাতির দিকে পাচারকারীদের মনোযোগ বাড়ছে।

কর্তৃপক্ষের ধারণা, পাচার হওয়া পিঁপড়াগুলোর বাজার মূল্য প্রায় ১০ লক্ষ কেনীয় শিলিং, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৮৫ লক্ষ টাকার সমান (১ কেনীয় শিলিং = ০.৮৫ টাকা, তারিখ: ২৫/০৫/২০২৪)।

আফ্রিকা বন্যপ্রাণী ফাউন্ডেশনের একজন কর্মকর্তা ফিলিপ মুরথি এই ঘটনার প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তিনি বলেন, পিঁপড়া মাটির উর্বরতা বাড়াতে, বীজ অঙ্কুরিত করতে এবং অন্যান্য প্রজাতির খাদ্য সরবরাহ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

তাই, পিঁপড়ার মতো ছোট প্রাণীর পাচার একটি মারাত্মক উদ্বেগের বিষয়। তিনি আরও যোগ করেন, কোনো ধরনের নিয়ন্ত্রণ ছাড়া এই ধরনের সম্পদ পাচার হলে তা পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে এবং সংশ্লিষ্ট দেশের কৃষি খাতে রোগের বিস্তার ঘটাতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বন্যপ্রাণী পাচারের এই নতুন ধারা বাংলাদেশের জন্যও একটি সতর্কবার্তা। আমাদের দেশেও বিভিন্ন সময়ে বন্যপ্রাণী পাচারের ঘটনা ঘটে, যা দেশের জীববৈচিত্র্যের জন্য হুমকিস্বরূপ।

এই ধরনের অপরাধ নিয়ন্ত্রণে আনতে না পারলে, তা স্থানীয় পরিবেশ এবং অর্থনীতির ওপর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলবে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *