খেলা শেষের ফলাফল: ড্র-এর পক্ষে সওয়াল, বেন স্টোকস এবং ইংল্যান্ডের দল কি এই বিষয়ে মনোযোগ দেবে?
টেস্ট ক্রিকেটে ড্র-এর গুরুত্ব নিয়ে আবারও আলোচনা শুরু হয়েছে। বিশেষ করে, ইংল্যান্ডের বর্তমান টেস্ট দলের অধিনায়ক বেন স্টোকসের আগ্রাসী ব্যাটিং-এর দর্শনের কারণে এই আলোচনা আরও জোরালো হয়েছে। তার দল ‘বাজবল’ নামে পরিচিত আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলে থাকে, যেখানে ড্র করার মানসিকতা খুব একটা দেখা যায় না।
কিন্তু প্রশ্ন হল, সব সময় কি শুধু জেতার জন্য ঝাঁপানোই সঠিক? নাকি মাঝে মাঝে ড্র-কে বেছে নেওয়াও বুদ্ধিমানের কাজ?
ক্রিকেট বোদ্ধাদের মতে, সাদা পোশাকের ক্রিকেটে ড্র-এর একটা বিশেষ স্থান রয়েছে। অনেক সময় দেখা যায়, একটি দল কঠিন পরিস্থিতিতে পড়েও দারুণ লড়াই করে ম্যাচ ড্র করতে সক্ষম হয়েছে। আবার, কখনো কখনো দিনের শেষে ড্র-ই হয় উভয় দলের কাছে সেরা ফল।
পরিসংখ্যান বলছে, টেস্ট ক্রিকেটের প্রায় দেড়শো বছরের ইতিহাসে এখন পর্যন্ত খেলা হওয়া ম্যাচগুলোর মধ্যে এক-তৃতীয়াংশই ড্র হয়েছে।
ইংল্যান্ডের বর্তমান অধিনায়ক বেন স্টোকস সাধারণত ড্র-কে অপছন্দ করেন। তার লক্ষ্য থাকে, যেকোনো মূল্যে ম্যাচ জেতা। তার অধীনে ইংল্যান্ড দল কিছু স্মরণীয় জয় পেলেও, কিছু ম্যাচে বড় ব্যবধানে হারের তিক্ত স্বাদও তাদের পেতে হয়েছে।
উদাহরণস্বরূপ, গত বছর ভারতের রাজকোটে এবং নিউজিল্যান্ডের হ্যামিল্টনে ইংল্যান্ডের পরাজয় বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
অন্যদিকে, সাবেক ক্রিকেটার এবং ধারাভাষ্যকারদের একাংশ মনে করেন, সব পরিস্থিতিতে আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলার সুযোগ নাও থাকতে পারে। বিশেষ করে, যখন প্রতিপক্ষ শক্তিশালী হয়, অথবা সিরিজের ফলাফল নির্ধারণের ক্ষেত্রে ড্র গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে, তখন কিছুটা রক্ষণাত্মক মানসিকতা নিয়ে খেলা ভালো।
তাদের মতে, উত্তেজনাপূর্ণ জয় যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনই লড়াকু ড্র-ও দলের জন্য মূল্যবান হতে পারে।
ইংল্যান্ডের বর্তমান দল ‘বাজবল’ খেলার ধরনে কিছু পরিবর্তন এনেছে, তবে এখনো তাদের মধ্যে আগ্রাসী মানসিকতাই বেশি দেখা যায়। প্রশ্ন হল, আসন্ন গুরুত্বপূর্ণ সিরিজগুলোতে, যেমন ভারত এবং অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে, তারা কি ড্র-এর সম্ভাবনাকে বিবেচনা করবে? নাকি জয়ের জন্য মরিয়া হয়ে খেলতে গিয়ে হারের ঝুঁকি নেবে?
যদি ইংল্যান্ড দল ড্র-কে কৌশল হিসেবে ব্যবহার করতে পারে, তবে তা তাদের জন্য ভালো ফল বয়ে আনতে পারে। কারণ, সব সময় প্রতিপক্ষকে হারিয়ে জয় পাওয়া সম্ভব নাও হতে পারে।
এমন পরিস্থিতিতে ড্র করে ম্যাচ বাঁচানোও দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। সম্ভবত, সামনের দিনগুলোতে বেন স্টোকস এবং তার দলকে এই বিষয়ে নতুন করে ভাবতে হবে।
তথ্য সূত্র: The Guardian