বিয়ের ভোজ: মানবিক সম্পর্কের উষ্ণতায় ভরপুর!

“বিবাহ ভোজ” : ভালোবাসার গল্প, সম্পর্কের টানাপোড়েন এবং নতুন পরিবারের খোঁজে

বর্তমান সময়ে সম্পর্কের সংজ্ঞাগুলো যেন অনেক বেশি বহুমাত্রিক। এই প্রেক্ষাপটে, পরিচালক অ্যান্ড্রু আহন-এর ছবি “বিবাহ ভোজ” (The Wedding Banquet) এমনই এক গল্প নিয়ে এসেছে, যেখানে দুটি ভিন্ন সম্পর্ক এবং তাদের পারস্পরিক জটিলতাগুলো প্রধান বিষয়। ১৯৯৩ সালের একই নামের ছবির আধুনিক সংস্করণ এটি।

গল্পের কেন্দ্রে রয়েছে দুটি যুগল—মিন, যিনি একজন ধনী কোরীয় পরিবারের সন্তান এবং ক্রিস, যিনি মিনের প্রেমিক। মিন যুক্তরাষ্ট্রে থাকতে চায়, ক্রিসের সঙ্গে তার সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে চায়, এবং পরিবারের চাপ এড়াতে চায়। অন্যদিকে, অ্যাঞ্জেলা ও লি নামের দুই নারী, যারা আইভিএফ-এর মাধ্যমে সন্তান নিতে চান, কিন্তু আর্থিক সমস্যা তাদের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়।

মিন এবং অ্যাঞ্জেলার মধ্যে একটি ‘ভুয়া’ বিয়ের ব্যবস্থা হয়। এর কারণ, মিনকে যুক্তরাষ্ট্রে থাকার জন্য গ্রিন কার্ডের প্রয়োজন। অ্যাঞ্জেলা ও লি-কে আইভিএফ-এর খরচ যোগাতে অর্থের দরকার। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পথে আসে নানা জটিলতা। বিশেষ করে, যখন মিনের ঠাকুরমা, যিনি কোরিয়ান ঐতিহ্য ভালোবাসেন এবং হঠাৎ করে তাদের বাড়িতে আসেন, পরিস্থিতি আরও কঠিন হয়ে পড়ে।

ছবিতে সম্পর্কের গভীরতা ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে। একদিকে যেমন দেখা যায়, পরিবারের প্রত্যাশা আর ব্যক্তিগত ইচ্ছের দ্বন্দ্ব, তেমনই ভালোবাসার মানুষের পাশে থাকার মানসিকতাও স্পষ্ট হয়। ছবিতে অভিনয় করেছেন বোয়েন ইয়ং, যিনি ক্রিসের চরিত্রে অভিনয় করেছেন; এবং হুন জি-চান মিন চরিত্রে চমৎকার অভিনয় করেছেন। এছাড়া কেলি মারি ট্রান, যিনি অ্যাঞ্জেলার ভূমিকায় এবং লিলি গ্ল্যাডস্টোন লি চরিত্রে অভিনয় করেছেন। ইয়ং ইউ-জুং মিনের ঠাকুরমার চরিত্রে এবং জোয়ান চেন অ্যাঞ্জেলার মায়ের চরিত্রে অভিনয় করে দর্শকদের মন জয় করেছেন।

ছবিতে, “ফাউন্ড ফ্যামিলি” ধারণাটির ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ, রক্তের সম্পর্ক ছাড়াও ভালোবাসার মাধ্যমে একটি নতুন পরিবার তৈরি করা যায়। তবে, কিছু ক্ষেত্রে মনে হয়, চরিত্রগুলো তাদের সমস্যার সমাধানে আরও বেশি প্রচেষ্টা করতে পারতো। অ্যাঞ্জেলা ও ক্রিসের মধ্যে গভীর সম্পর্কের অভাব, তাদের দুর্বলতাগুলো সম্পর্কের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

সবকিছু বিবেচনা করে, “বিবাহ ভোজ” একটি হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া ছবি, যেখানে সম্পর্কের জটিলতা, পরিবারের চাপ এবং ভালোবাসার গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে। ছবিটির গল্প বলার ধরন এবং অভিনয়শৈলী দর্শকদের ভালো লাগবে। তবে, কিছু দুর্বলতা সত্ত্বেও, ছবিটির মূল বার্তা দর্শকদের মনে দাগ কাটবে।

পর্যালোচনা অনুযায়ী, ছবিটিকে ৪ এর মধ্যে ২.৫ স্টার দেওয়া হয়েছে।

তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *