অভিনেতা জিন হ্যাকম্যানের স্ত্রী বেটসি আরাকাওয়ার মৃত্যুরহস্যের তদন্ত রিপোর্ট সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে। জানা গেছে, মৃত্যুর আগে তিনি ফ্লু-এর মতো উপসর্গ নিয়ে ইন্টারনেটে অনেক তথ্য খুঁজেছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের সান্টা ফে শহরে তাদের বাড়িতেই আরাকাওয়ার মৃতদেহ পাওয়া যায়।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, বেটসি আরাকাওয়া হান্তাভাইরাস পালমোনারি সিন্ড্রোমে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। এটি একটি বিরল রোগ, যা ইঁদুরের মাধ্যমে ছড়ায় এবং ফ্লু-এর মতো উপসর্গ সৃষ্টি করতে পারে।
এই রোগের কারণে শ্বাসকষ্টও হতে পারে।
তদন্ত প্রতিবেদনে দেখা যায়, ৮ থেকে ১২ই ফেব্রুয়ারির মধ্যে আরাকাওয়া কোভিড-১৯ এবং ফ্লু-এর উপসর্গ নিয়ে অনলাইনে খোঁজখবর করছিলেন। তিনি জানতে চেয়েছিলেন, কোভিড কি মাথা ঘোরা বা নাক দিয়ে রক্ত পড়ার কারণ হতে পারে?
১১ই ফেব্রুয়ারি তিনি তার ম্যাসাজ থেরাপিস্টকে একটি ইমেইল করেন। সেখানে জানান, হ্যাকম্যানের ফ্লু বা ঠান্ডার মতো উপসর্গ দেখা দেওয়ায় তিনি পরের দিনের অ্যাপয়েন্টমেন্ট বাতিল করতে বাধ্য হয়েছেন।
আরাকাওয়ার ফোনের কললিস্ট পরীক্ষা করে দেখা যায়, ১২ই ফেব্রুয়ারি সকালে তিনি সান্টা ফে-এর একটি কনসিয়ার্জ মেডিকেল সার্ভিসে ফোন করেছিলেন এবং তাদের সঙ্গে ২ মিনিটের কম সময় কথা বলেন।
এছাড়াও, ঘটনার দিন তিনি কিছু দোকানে গিয়েছিলেন।
তদন্তকারীরা হ্যাকম্যান দম্পতির বাড়ির ভেতরের কিছু ছবি ও ভিডিও প্রকাশ করেছেন। সেখানে দেখা যায়, কর্মকর্তারা ঘরটির বিভিন্ন অংশে যান এবং কোনো অস্বাভাবিক কিছু খুঁজে পাননি।
এমনকি, তাদের সংগ্রহ করা শিল্পকর্মগুলোও আগের মতোই ছিল।
প্রকাশিত ফুটেজে দেখা যায়, কর্মকর্তারা ঘরের চারপাশে গ্যাস লিকেজ হয়েছে কিনা, তা পরীক্ষা করছিলেন। তবে কোনো লিকেজ পাওয়া যায়নি।
এছাড়াও, ঘরে থাকা নগদ অর্থ গণনা করতেও দেখা যায় তাদের। বাথরুমের কাউন্টারে ওষুধের বোতলগুলোও দেখা যায়।
হ্যাকম্যান পরিবারের পক্ষ থেকে প্রথমে এই তদন্তের বিস্তারিত তথ্য প্রকাশের বিরোধিতা করা হয়েছিল। তাদের দাবি ছিল, মৃত ব্যক্তিদের ছবি প্রকাশ করা হলে পরিবারের ব্যক্তিগত অধিকার ক্ষুণ্ণ হবে।
তবে আদালতের নির্দেশে তদন্তের কিছু অংশ প্রকাশ করা হয়েছে।
নিউ মেক্সিকো স্বাস্থ্য বিভাগের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হ্যাকম্যানের বাড়ির বাইরের কিছু অংশে ইঁদুরের বিষ্ঠা পাওয়া গেছে। তবে ঘরের ভেতরে ইঁদুরের কোনো চিহ্ন ছিল না।
আরাকাওয়ার মৃতদেহের কাছে একটি বাথরুমে তাদের একটি কুকুরকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। এছাড়া, আরও দুটি কুকুর জীবিত ছিল।
পশুচিকিৎসা পরীক্ষাগারের রিপোর্টে বলা হয়েছে, কুকুরটি পানিশূন্যতা ও অপুষ্টির কারণে মারা গেছে।
তথ্যসূত্র: সিএনএন