যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি সম্পদ ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা একটি গুরুত্বপূর্ণ সংস্থায় (GSA) সম্প্রতি দেখা দিয়েছে বিতর্ক। এই সংস্থার কার্যক্রমের ওপর এখন প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ উঠেছে প্রযুক্তি উদ্যোক্তা এলন মাস্কের বিরুদ্ধে।
জানা গেছে, মাস্কের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ব্যক্তিরা গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন হওয়ার পরই এমন পরিবর্তনের সূচনা হয়েছে।
জেনারেল সার্ভিসেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (GSA) হলো যুক্তরাষ্ট্রের একটি ফেডারেল এজেন্সি, যা সরকারি সম্পত্তি দেখাশোনা করে এবং বিভিন্ন চুক্তি তদারকি করে থাকে। এই সংস্থার প্রধান হিসেবে রয়েছেন এমন একজন, যিনি সিলিকন ভ্যালির প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ এবং যার স্ত্রী একসময় মাস্কের সামাজিক মাধ্যম কোম্পানি X-এ কাজ করতেন।
এছাড়াও, মাস্কের মালিকানাধীন গাড়ি প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান টেসলার একজন প্রকৌশলীও বর্তমানে GSA-এর প্রযুক্তি বিভাগের দায়িত্বে রয়েছেন।
অভিযোগ উঠেছে, এই পরিবর্তনের পর থেকেই GSA-তে ব্যয় সংকোচনের নামে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এর অংশ হিসেবে সরকারি সম্পত্তি বিক্রি এবং বিভিন্ন চুক্তি বাতিলের প্রক্রিয়া চলছে। এই বিষয়গুলো নিয়ে এরই মধ্যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অনেকে।
সংস্থা সূত্রে খবর, GSA-এর কর্মকর্তাদের মধ্যে মাস্কের কোম্পানি স্টারলিঙ্কের ইন্টারনেট ব্যবহারেরও প্রমাণ পাওয়া গেছে। এমনকি, GSA-এর ছাদে এই স্যাটেলাইট নেটওয়ার্কের সরঞ্জামও পাওয়া গেছে, যা নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এই বিষয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে।
এদিকে, খরচ কমানোর নামে মাস্কের আগের কোম্পানি টুইটারে (বর্তমানে X) কর্মীদের ছাঁটাই এবং অন্যান্য বিতর্কিত পদক্ষেপের অভিযোগ উঠেছিল। সেই ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরাই এখন GSA-তে একই ধরনের কার্যক্রম চালাচ্ছেন বলেও শোনা যাচ্ছে।
GSA-এর এই ধরনের কার্যকলাপে অনেকে সরকারি কার্যক্রমের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার অভাব দেখছেন। তাদের মতে, সরকারি সংস্থায় বেসরকারি প্রভাব বিস্তারের ফলে জনস্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের এই ঘটনা বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটেও আলোচনার জন্ম দিতে পারে। কারণ, সরকারি সম্পদ ব্যবস্থাপনা, প্রযুক্তি ব্যবহার এবং বেসরকারি খাতের সঙ্গে সরকারের সম্পর্ক—এসব বিষয় উন্নয়নশীল দেশগুলোতেও গুরুত্বপূর্ণ।
বাংলাদেশের সরকারি দপ্তরগুলোতেও প্রযুক্তিনির্ভরতা বাড়ছে, তাই সরকারি কাজে স্বচ্ছতা ও দক্ষতার বিষয়টি নিশ্চিত করা জরুরি।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস (এপি)।