ফোন থেকে মুক্তি! ৪ সপ্তাহের ডিজিটাল ডিটক্সে আমি…

ডিজিটাল ডিটক্স: স্মার্টফোন এবং মানসিক স্বাস্থ্যের মধ্যে সম্পর্ক

বর্তমান ডিজিটাল যুগে, স্মার্টফোন আমাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত, কাজ থেকে শুরু করে বিনোদন—সবকিছুতেই যেন এর উপস্থিতি।

তবে, অতিরিক্ত স্ক্রিন টাইমের কারণে মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর এর প্রভাব নিয়ে অনেক আলোচনা হচ্ছে। সম্প্রতি, একজন ব্যক্তির চার সপ্তাহের ডিজিটাল ডিটক্সের অভিজ্ঞতা নিয়ে একটি নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে, যেখানে এই পরিবর্তনের ইতিবাচক দিকগুলো তুলে ধরা হয়েছে।

ডিজিটাল ডিটক্স আসলে কী? সহজ ভাষায়, এটি হলো ডিজিটাল ডিভাইস থেকে কিছু সময়ের জন্য বিরতি নেওয়া। এর মানে হলো, স্মার্টফোন, সামাজিক মাধ্যম, এবং অন্যান্য অ্যাপ ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকা।

যারা এই ধরনের ডিটক্স করেন, তারা সাধারণত তাদের ফোন থেকে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, বা অন্যান্য অ্যাপগুলি সরিয়ে ফেলেন। এই বিরতির মূল উদ্দেশ্য হলো মানসিক চাপ কমানো এবং মনকে বিশ্রাম দেওয়া।

এই ডিটক্সের প্রথম সপ্তাহে, ব্যক্তিটি কিছু সমস্যার সম্মুখীন হন। ফোন ব্যবহারের অভ্যাস থেকে মুক্তি পাওয়া কঠিন ছিল। সামাজিক মাধ্যম ব্রাউজ করার আকর্ষণ অনুভব করতেন এবং মনে হতো যেন জগৎ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছেন।

তবে ধীরে ধীরে, তিনি উপলব্ধি করতে শুরু করেন যে সারাদিন কতবার তিনি ফোন ব্যবহার করেন, সে সম্পর্কে তার কোনো ধারণা ছিল না।

দ্বিতীয় সপ্তাহে, উদ্বেগ কিছুটা কমে আসে। ফোন ধরার প্রবণতাও আগের চেয়ে কমতে থাকে। কাজের সময় বাদে, তিনি সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করা বন্ধ করে দেন।

এই সময়ে তিনি পুরনো কিছু শখের প্রতি মনোযোগ দেন, যেমন—ডায়েরি লেখা এবং রান্না করা।

তৃতীয় সপ্তাহে, সবকিছু যেন স্বাভাবিক হতে শুরু করে। রাতে দের পর্যন্ত সামাজিক মাধ্যমে সময় কাটানো বন্ধ হওয়ায় ঘুম ভালো হতে শুরু করে, যা দিনের বেলা আরও বেশি সতেজ অনুভব করতে সাহায্য করে।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, মানসিক শান্তির অনুভূতি ফিরে আসে।

চতুর্থ সপ্তাহে, তিনি বুঝতে পারেন যে সবসময় ডিজিটাল দুনিয়ায় ডুবে থাকার প্রয়োজন নেই। প্রযুক্তি জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হতে পারে, তবে এর ব্যবহার হওয়া উচিত নিয়ন্ত্রিত এবং সচেতন।

তিনি এখন আরও সচেতনভাবে স্ক্রিন টাইম ব্যবহার করেন এবং প্রয়োজন অনুযায়ী ডিভাইস থেকে দূরে থাকেন।

এই অভিজ্ঞতা থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা পাওয়া যায়। তা হলো, একটি পরিপূর্ণ জীবন যাপনের জন্য সবসময় অনলাইনে থাকার কোনো প্রয়োজন নেই।

ডিজিটাল জগৎ চমৎকার, তবে এটি আমাদের সময় এবং মনোযোগের বেশিটা যেন কেড়ে না নেয়।

ডিজিটাল ডিটক্সের মাধ্যমে মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি সম্ভব। অতিরিক্ত স্ক্রিন টাইম কমিয়ে, বই পড়া, পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানো বা প্রকৃতির কাছাকাছি যাওয়ার মতো বিষয়গুলোর প্রতি মনোযোগ দেওয়া যেতে পারে।

যারা অতিরিক্ত ফোন ব্যবহারের কারণে মানসিক চাপে ভুগছেন, তাদের জন্য ডিজিটাল ডিটক্স একটি কার্যকর উপায় হতে পারে।

তথ্য সূত্র: হেলথলাইন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *