ঘুমের অভাবে ভুগছে কিশোর? এখনই করুন এই কাজগুলো!

ছেলেমেয়েদের পর্যাপ্ত ঘুম: অভিভাবকদের জন্য জরুরি কিছু পরামর্শ

আজকের যুগে কিশোর-কিশোরীদের জীবনে ঘুমের অভাব একটি উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পড়াশোনার চাপ, স্মার্টফোনের ব্যবহার এবং অন্যান্য নানা কারণে তাদের ঘুমের সময় কমে যাচ্ছে। পর্যাপ্ত ঘুম না হলে তাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর খারাপ প্রভাব পড়ে, যা অভিভাবকদের জন্য একটি চিন্তার বিষয়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, কিশোর বয়সে পর্যাপ্ত ঘুমের গুরুত্ব অপরিসীম।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একজন কিশোরের প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা ঘুমের প্রয়োজন। কিন্তু অনেক ছাত্রছাত্রীর পক্ষেই তা সম্ভব হয় না। এর ফলে তাদের মধ্যে খিটখিটে মেজাজ, পড়াশোনায় অমনোযোগিতা, এবং বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা যায়। অভিভাবকদের তাদের সন্তানদের ঘুমের প্রতি মনোযোগী হওয়া উচিত।

তাহলে, কিশোর-কিশোরীদের ঘুমের সমস্যা সমাধানে কী করা যায়?

  • স্ক্রিন টাইম কমান: ঘুমাতে যাওয়ার অন্তত এক ঘণ্টা আগে মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ বা টিভির ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। স্মার্টফোন, ট্যাবলেট ও ভিডিও গেম ঘুমের সবচেয়ে বড় শত্রু।
  • ঘুমের পরিবেশ তৈরি করুন: ঘুমের জন্য শান্ত ও আরামদায়ক পরিবেশ প্রয়োজন। ঘর অন্ধকার ও নীরব রাখতে হবে। শব্দ কমাতে কানের প্লাগ ব্যবহার করা যেতে পারে।
  • নিয়মিত ঘুমের সময় নির্ধারণ করুন: প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমাতে যাওয়া এবং ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস করলে ঘুমের গুণগত মান বাড়ে। ঘুমের একটি নির্দিষ্ট রুটিন তৈরি করা প্রয়োজন।
  • ক্যাফিন ও চিনিযুক্ত খাবার পরিহার করুন: দুপুরের পর চা, কফি বা এনার্জি ড্রিঙ্কস খাওয়া উচিত নয়।
  • ঘুমের অভাবের লক্ষণগুলো সম্পর্কে সচেতন হন:
    * অতিরিক্ত ঘুমকাতরতা, সকালে ঘুম থেকে উঠতে দেরি হওয়া.
    * মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাওয়া বা অল্পতেই রেগে যাওয়া.
    * মনোযোগের অভাব, পড়াশোনায় দুর্বলতা.
    * মানসিক অবসাদ বা বিষণ্ণতা।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, পর্যাপ্ত ঘুম ভালো ফলাফলের জন্য অপরিহার্য। পরীক্ষায় ভালো ফল করা, খেলাধুলায় পারদর্শী হওয়া, এবং মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য পর্যাপ্ত ঘুমের বিকল্প নেই। পর্যাপ্ত ঘুম শরীরকে পুনরায় সক্রিয় করে তোলে, স্মৃতিশক্তি বাড়ায়, এবং শেখার ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

ঘুমের অভাবে কিশোর-কিশোরীরা মাদক ও ধূমপানের প্রতি আকৃষ্ট হতে পারে। এছাড়াও, ঘুমের অভাব তাদের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ আচরণ যেমন—বেপরোয়া গাড়ি চালানো অথবা অনিরাপদ শারীরিক সম্পর্কের মতো ঘটনার সম্ভবনা বাড়ায়।

বাবা-মায়ের উচিত সন্তানদের ঘুমের গুরুত্ব সম্পর্কে জানানো। তাদের বোঝানো দরকার যে পর্যাপ্ত ঘুম তাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য কতটা প্রয়োজনীয়। অভিভাবকদের উচিত তাদের সন্তানদের সাথে বন্ধুসুলভ আচরণ করা এবং তাদের ঘুমের সমস্যাগুলো সমাধানে সাহায্য করা।

পরিশেষে, অভিভাবকদের মনে রাখতে হবে, শিশুদের ভালো ঘুমের অভ্যাস গঠনে সাহায্য করা তাদের সুস্থ ভবিষ্যতের জন্য অত্যন্ত জরুরি। এই পরামর্শগুলো অনুসরণ করে, আপনি আপনার সন্তানের ঘুমের সমস্যাগুলো সমাধানে সহায়তা করতে পারেন। প্রয়োজনে, একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে।

তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *