প্রথমবার: ক্যামেরায় ধরা পড়ল ‘দৈত্যাকার স্কুইড’! বিজ্ঞানীরা হতভম্ব!

শিরোনাম: প্রথমবারের মতো ক্যামেরাবন্দী হলো বিশাল আকারের কলোসাল স্কুইডের বাচ্চা, গভীর সমুদ্রের রহস্য উন্মোচন

গভীর সমুদ্রে বাস করা বিশাল আকারের কলোসাল স্কুইডের একটি বাচ্চার ছবি প্রথমবারের মতো ধারণ করেছেন বিজ্ঞানীরা। আটলান্টিক মহাসাগরের দক্ষিণ স্যান্ডউইচ দ্বীপপুঞ্জের কাছে, সমুদ্রের প্রায় ৬০০ মিটার গভীরে এই বিরল দৃশ্য ক্যামেরাবন্দী করা হয়। স্কুইডটির এই ছবি গভীর সমুদ্রের অজানা জগৎ সম্পর্কে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।

বিজ্ঞানীরা জানান, কলোসাল স্কুইড পৃথিবীর সবচেয়ে বড় অমেরুদণ্ডী প্রাণী। প্রাপ্তবয়স্ক কলোসাল স্কুইড প্রায় ৭ মিটার পর্যন্ত লম্বা হতে পারে এবং এদের ওজন হতে পারে প্রায় ৫০০ কিলোগ্রামের বেশি। এত বিশাল আকারের এই প্রাণীটির জীবনযাত্রা সম্পর্কে এতদিন খুব বেশি তথ্য জানা ছিল না। কারণ, গভীর সমুদ্রে এদের দেখা পাওয়া খুবই কঠিন ছিল। এর আগে, মৃত বা আহত কলোসাল স্কুইড মাঝে মাঝে জেলেদের জালে আটকা পড়ত।

“শমিট ওশেন ইনস্টিটিউট” নামক একটি গবেষণা সংস্থার গবেষকরা একটি বিশেষ জাহাজে করে সমুদ্রের গভীরে অভিযান চালান। গত ৯ই মার্চ তারা এই অসাধারণ দৃশ্য ক্যামেরাবন্দী করেন। অভিযান দলের প্রধান বিজ্ঞানী মিশেল টেলর জানান, প্রথমে তারা স্কুইডটিকে “আকর্ষণীয় এবং অসাধারণ” মনে করেছিলেন। কয়েক দিন পরেই তারা বুঝতে পারেন, এই দৃশ্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ।

গবেষকরা জানান, ক্যামেরাবন্দী হওয়া বাচ্চা কলোসাল স্কুইডটির দৈর্ঘ্য ছিল প্রায় ৩০ সেন্টিমিটার। এর স্বচ্ছ শরীর এবং বিশেষ ধরনের হুকযুক্ত শুঁড় দেখে বিজ্ঞানীরা এটিকে “জুভেনাইল” বা বাচ্চা হিসেবে চিহ্নিত করেন। অকল্যান্ড ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজির ড. ক্যাট বোলস্টাড বলেন, “১০০ বছর ধরে আমরা মূলত তিমি এবং সামুদ্রিক পাখির পেটে এদের (কলোসাল স্কুইড) শিকারের অবশিষ্টাংশ দেখেছি। এই প্রথম তাদের জীবন্ত অবস্থায় এত কাছ থেকে দেখা গেল।”

গবেষকরা আরও জানান, এই ধরনের আবিষ্কার সমুদ্র এবং এর জীববৈচিত্র্য সম্পর্কে আমাদের জ্ঞানের গভীরতা বাড়ায়। গভীর সমুদ্র এখনও অনেক রহস্যে ঘেরা। তাই, এ ধরনের গবেষণা আমাদের সমুদ্রকে আরও ভালোভাবে বুঝতে সাহায্য করে।

ড. অ্যারন ইভান্স বলেন, “এই ধরনের মাঝারি আকারের (বাচ্চা) স্কুইড দেখা সত্যিই অসাধারণ। এর মাধ্যমে আমরা এই রহস্যময় প্রাণীর জীবনচক্র সম্পর্কে আরও অনেক নতুন তথ্য জানতে পারব।

সমুদ্রের গভীরে জীবনের অনুসন্ধান একটি চলমান প্রক্রিয়া। শমিট ওশেন ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ড. জ્યોতিকা ভিরমানি বলেন, “এই ধরনের অবিস্মরণীয় মুহূর্তগুলো আমাদের মনে করিয়ে দেয়, সমুদ্র এখনো কত অজানা রহস্যে পরিপূর্ণ।”

তথ্য সূত্র: পিপলস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *