কম্বোডিয়া, চীনের আর্থিক সহায়তা চাইছে, কারণ মার্কিন শুল্ক যুদ্ধের মধ্যে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সফর চলছে। বৃহস্পতিবার, কম্বোডিয়ার রাজধানী নমপেনে চীনের প্রেসিডেন্টের এই সফরটি মূলত দুটি দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও জোরদার করার উদ্দেশ্যে।
এই সফরে অবকাঠামো উন্নয়নে চীনের কাছ থেকে আরও বেশি সহযোগিতা আশা করছে কম্বোডিয়া।
কম্বোডিয়া সরকারের মুখপাত্র মেয়া সোখসেনসান জানিয়েছেন, তারা আশা করছেন চীন সরকার ১৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ ফুনান টেকো খাল প্রকল্পের জন্য আর্থিক সহায়তার ঘোষণা করবে। এই প্রকল্পটি কম্বোডিয়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো প্রকল্পগুলোর মধ্যে অন্যতম।
উল্লেখযোগ্য, চীন ইতিমধ্যেই কম্বোডিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী এবং দেশটির বিভিন্ন প্রকল্পে, যেমন রাস্তা ও বিমানবন্দরে, বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে। কম্বোডিয়া চীনের বৃহত্তম ঋণদাতাও বটে।
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র-চীনের মধ্যে বাণিজ্যযুদ্ধ চলছে, যার প্রভাব কম্বোডিয়াতেও পড়েছে। কম্বোডিয়া থেকে যুক্তরাষ্ট্র পোশাক ও জুতা আমদানি করে, যার প্রায় অর্ধেক চীনা মালিকানাধীন কোম্পানিগুলো সরবরাহ করে থাকে।
তবে, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র কম্বোডিয়ার পণ্যের ওপর ৪৯ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। এই পরিস্থিতিতে, কম্বোডিয়া আশা করছে চীন তাদের পাশে থাকবে।
বিশ্লেষকদের মতে, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং কম্বোডিয়াকে এই বার্তা দিতে চাইছেন যে, বেইজিংয়ের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ করে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া উচিত হবে না।
কম্বোডিয়া সফরকালে শি জিনপিং “হেজেমনি” এবং “সুরক্ষাবাদ”-এর বিরোধিতা করার আহ্বান জানিয়েছেন।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)-এর তথ্য অনুযায়ী, কম্বোডিয়া চীনের সঙ্গে বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার এবং দেশটির বিদেশি ঋণের এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি চীনের কাছে বকেয়া।
যদিও ফুনান টেকো খাল প্রকল্পের জন্য চীন এখনো কোনো আর্থিক সহায়তার ঘোষণা করেনি। তবে, কম্বোডিয়া সরকার একসময় এই প্রকল্পের মোট ব্যয়ের ১০০ শতাংশ চীন বহন করবে বললেও, পরে তা পরিবর্তন করে ৪৯ শতাংশে নামিয়ে এনেছে।
এই প্রকল্পের আনুমানিক খরচ ১.৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, গত বছর চীন কম্বোডিয়াকে কোনো নতুন ঋণ দেয়নি। যেখানে আগে তারা দেশটি কে কয়েকশ মিলিয়ন ডলার ঋণ দিত।
কম্বোডিয়া সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, চীন তাদের সার্বভৌমত্ব, সমতা এবং অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার নীতিতে বিশ্বাসী। তারা আরও উল্লেখ করেছে যে, কম্বোডিয়ার আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে চীন একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
তথ্যসূত্র: আল জাজিরা