আতঙ্কের সৃষ্টি! ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ: বাড়ছে মৃতের সংখ্যা!

যুদ্ধ আরও তীব্র: ইউক্রেন জুড়ে রাশিয়ার আক্রমণ, সাহায্য চাইছে যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্য

গত কয়েক দিন ধরে ইউক্রেন জুড়ে রাশিয়ার সামরিক অভিযান আরও জোরদার হয়েছে। বিভিন্ন শহরে রাশিয়ার হামলায় বহু বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে শিশুও।

সম্প্রতি, দেশটির পূর্বাঞ্চলে ড্রোন হামলার ঘটনা ঘটেছে, যেখানে বেশ কয়েকজন হতাহত হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে, ইউক্রেন যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে অত্যাধুনিক প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেনার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

প্যারিসে আসন্ন এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং মধ্যপ্রাচ্যের বিশেষ দূত সহ ইউরোপীয় কর্মকর্তাদের সাথে ইউক্রেন পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করার কথা রয়েছে। এই বৈঠকে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্র মন্ত্রী এবং প্রেসিডেন্টের চিফ অফ স্টাফও উপস্থিত থাকবেন। যদিও ইউক্রেনীয় প্রতিনিধি দল তাদের আলোচকদের নাম প্রকাশ করেনি।

অন্যদিকে, রাশিয়া তাদের অবস্থানে অনড় রয়েছে। তারা ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেছে।

যদিও রাশিয়া কর্তৃক আরোপিত ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতি শেষ হওয়ার পথে, এখনো পর্যন্ত একটি বৃহত্তর যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ সাংবাদিকদের বলেন, “ইউক্রেনীয় সশস্ত্র বাহিনী এই অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি মানছে না।”

রাশিয়া অভিযোগ করেছে যে ইউক্রেনীয় ড্রোনগুলো ব্রায়ানস্ক অঞ্চলের একটি বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র এবং একটি উচ্চ-ভোল্টেজের পাওয়ার লাইনে আঘাত হেনেছে। এছাড়াও, তারা ক্রিমিয়ার খেরসনে একটি বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র এবং কুর্স্কে দুটি গ্যাস পাইপলাইনে হামলার দাবি করেছে।

যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে রাশিয়ার পক্ষ থেকে কূটনীতিক তৎপরতাও অব্যাহত রয়েছে। রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রী সের্গেই লাভরভ বলেছেন, “১৯৯১ সালের সীমান্ত ফিরিয়ে আনার যে দাবি ইউক্রেন জানাচ্ছে, তা সম্ভব নয়।”

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ইউক্রেনকে বিভক্ত করার প্রস্তাব এসেছে বলে জানা গেছে, যা রাশিয়া প্রত্যাখ্যান করেছে।

এই পরিস্থিতিতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ১০টি প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেনার প্রস্তাব দিয়েছেন। এর আগে, রাশিয়া কর্তৃক সুমি শহরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় বহু বেসামরিক লোক নিহত হয়।

ইউক্রেনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, রাশিয়ার ছোড়া দুটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে এই হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।

এই সংকটকালে বিভিন্ন দেশ ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। জার্মানি চারটি আইআরআইএস-টি (IRIS-T) স্বল্প-পাল্লার বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, ১২০টি বহনযোগ্য বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্রের জন্য ৩০টি ইন্টারসেপ্টর ক্ষেপণাস্ত্র দেওয়ার ঘোষণা করেছে।

ডেনমার্ক ২০২৭ সাল পর্যন্ত ইউক্রেনকে ১ বিলিয়ন ইউরোর সামরিক সহায়তা প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, যার মধ্যে বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, আর্টিলারি সিস্টেম এবং গোলাবারুদ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

যুক্তরাজ্য ও নরওয়ে মিলে ৬০০ মিলিয়ন ডলারের একটি প্যাকেজ ঘোষণা করেছে, যার মাধ্যমে সামরিক সরঞ্জাম মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ, রাডার ও অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক মাইন সরবরাহ করা হবে। নরওয়ে অতিরিক্ত ৯৩৮ মিলিয়ন ডলার দেবে একটি নতুন ইউক্রেনীয় ব্রিগেডকে সজ্জিত করতে।

এই পরিস্থিতিতে, ইউক্রেন যুদ্ধে চীনের সামরিক অংশগ্রহণের বিষয়টি নতুন করে সামনে এসেছে। জানা গেছে, ইউক্রেনে রাশিয়ার পক্ষে যুদ্ধ করছে এমন অন্তত কয়েকশ’ চীনা নাগরিককে শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে কয়েকজন চীনা সেনাকে আটকও করা হয়েছে।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *