যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ প্রধানের অপসারণ চেয়েছেন ট্রাম্প
আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান জেরোম পাওয়েলের মধ্যেকার সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা চলছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্ব অর্থনীতির উপর এর সম্ভাব্য প্রভাব সম্পর্কে তারা গভীর পর্যবেক্ষন করছেন।
ট্রাম্প ফেডারেল রিজার্ভের (ফেড) প্রধান জেরোম পাওয়েলের কঠোর সমালোচনা করে বলেছেন, সুদের হার কমানোর ক্ষেত্রে পাওয়েল যথেষ্ট আগ্রাসী নন। এমনকি তিনি পাওয়েলকে দ্রুত সরিয়ে দেওয়ারও ইঙ্গিত দিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট মনে করেন, ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের (ইসিবি) মতো ফেডারেল রিজার্ভেরও দ্রুত সুদের হার কমানো উচিত ছিল। ট্রাম্পের মতে, তেলের দাম কমা এবং খাদ্যপণ্যের দাম—এমনকি ডিমের দামও—কমে আসায় যুক্তরাষ্ট্র শুল্কের মাধ্যমে লাভবান হচ্ছে। কিন্তু পাওয়েলের নীতির কারণে অর্থনৈতিক উন্নতি সেভাবে হচ্ছে না। যদিও পাওয়েলের মেয়াদ এখনো শেষ হয়নি, যা আগামী বছর পর্যন্ত বহাল থাকবে।
অন্যদিকে, ফেডারেল রিজার্ভের প্রধান জেরোম পাওয়েল জানিয়েছেন, তিনি পদত্যাগ করবেন না। তিনি আরও বলেছেন, ফেডারেল রিজার্ভের সিদ্ধান্তগুলো সবসময় সব আমেরিকানের মঙ্গলের জন্য নেওয়া হয়, কোনো রাজনৈতিক চাপ এর উপর কাজ করে না। পাওয়েল জোর দিয়ে বলেন, ফেডারেল রিজার্ভের স্বাধীনতা আইন দ্বারা সুরক্ষিত। কাউকে অপসারণ করতে হলে তার উপযুক্ত কারণ থাকতে হবে।
আর্থিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ট্রাম্পের এই ধরনের মন্তব্যের কারণ হতে পারে দেশের অর্থনৈতিক মন্দা পরিস্থিতি এবং এর জন্য তিনি পাওয়েলকে দায়ী করতে চাইছেন। বর্তমানে, যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য নীতি এবং শুল্কের কারণে অর্থনৈতিক চাপ বাড়ছে, যা মুদ্রাস্ফীতি এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে ধীর করে দিচ্ছে।
ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক সম্প্রতি তাদের মূল সুদের হার ২.৫% থেকে কমিয়ে ২.২৫% করেছে। এই পরিস্থিতিতে, যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভের নীতি বিশ্ব অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। উন্নয়নশীল দেশগুলো, বিশেষ করে বাংলাদেশের মতো দেশগুলো, মার্কিন নীতিমালার পরিবর্তনের দিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখছে। কারণ, সুদের হার, বাণিজ্য নীতি এবং মুদ্রাস্ফীতির মতো বিষয়গুলো বিশ্ব অর্থনীতিতে গভীর প্রভাব ফেলে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ফেডারেল রিজার্ভের স্বাধীনতা বজায় রাখা এবং সুদের হারের বিষয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া জরুরি। এতে করে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা সম্ভব হবে এবং বিশ্ব অর্থনীতিতে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস