পাওয়েলের অপসারণ চান ট্রাম্প! সুদের হার নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ

যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভের (ফেড) প্রধান জেরোম পাওয়েলকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ট্রাম্পের অভিযোগ, পাওয়েল সুদহার কমানোর ক্ষেত্রে ‘দেরি’ করছেন, যা যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর।

তিনি পাওয়েলকে তার পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ারও ইঙ্গিত দিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (বাংলাদেশ সময়) ট্রাম্প তার সামাজিক মাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যালে’ এক পোস্টে পাওয়েলকে ‘সবসময় ভুল’ এবং ‘অনেক দেরিতে’ কাজ করা ব্যক্তি হিসেবে উল্লেখ করেন। ট্রাম্পের এই আক্রমণ এমন এক সময়ে এসেছে, যখন ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক (ইসিবি) আবারও সুদহার কমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে।

যদিও ট্রাম্প তার এই মন্তব্যে ইসিবি’র এই সিদ্ধান্তের কারণ হিসেবে তার শুল্কনীতির (ট্যারিফ) কারণে সৃষ্ট অস্থিরতার বিষয়টি উল্লেখ করেননি।

যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে সরকারের হস্তক্ষেপ সাধারণত হয় না, তবে ট্রাম্প প্রায়ই পাওয়েলকে সুদের হার কমানোর জন্য চাপ সৃষ্টি করেছেন। এর আগে, ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতি এবং শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ার বাজারে দরপতন হয়।

বিশেষজ্ঞরা এমন পরিস্থিতিতে মন্দা আসারও আশঙ্কা করছেন।

ফেডারেল রিজার্ভের প্রধান পাওয়েল বুধবার সতর্ক করে বলেছিলেন, ট্রাম্পের শুল্ক নীতি মূল্যস্ফীতি বাড়াতে পারে। এর প্রতিক্রিয়ায়, ফেডারেল রিজার্ভ সুদের হার কমাতে দ্বিধা বোধ করতে পারে।

বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও) সতর্ক করেছে, ট্রাম্পের শুল্ক নীতির কারণে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য চলতি বছরে কমে যেতে পারে, যা বিশ্ব অর্থনীতির প্রবৃদ্ধিকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।

ট্রাম্প তার পোস্টে আরও বলেন, ‘পাওয়েলের অপসারণ দ্রুত হওয়া উচিত’। তিনি উল্লেখ করেন, তেলের দাম এবং ডিমের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম কমছে, এবং শুল্কের কারণে যুক্তরাষ্ট্র লাভবান হচ্ছে।

ট্রাম্পের মতে, ইসিবি’র মতো ফেডারেল রিজার্ভের উচিত ছিল দ্রুত সুদের হার কমানো।

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন পাওয়েলকে ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ারম্যান হিসেবে মনোনীত করেন। এরপর বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও ২০২২ সালে তাকে এই পদে পুনর্বহাল করেন।

তবে, যুক্তরাষ্ট্রের আইনে ফেডারেল রিজার্ভ প্রধানকে তার নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে প্রেসিডেন্ট চাইলেও অপসারণ করতে পারেন না।

যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক এই বছর শুরু থেকে সুদের হার ৪.২৫% থেকে ৪.৫%-এর মধ্যে রেখেছে। বিশ্ব অর্থনীতিতে যুক্তরাষ্ট্রের এই সুদহার এবং বাণিজ্য নীতির পরিবর্তন বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও প্রভাব ফেলতে পারে।

বিশেষ করে, বাণিজ্য এবং বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হারে এর প্রভাব দেখা যেতে পারে। তাই, আন্তর্জাতিক বাজারের এই পরিবর্তনগুলোর দিকে বাংলাদেশের অর্থনীতিবিদদের বিশেষ নজর রাখা উচিত।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *