ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের সেতু গড়তে ইতালির প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ চেষ্টা!

ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনার জন্য ওয়াশিংটন ডিসি পৌঁছেছেন। বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টা করা হবে।

বিশেষ করে, ট্রাম্পের বাণিজ্য শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তের প্রেক্ষাপটে মেলোনি এই বৈঠককে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখছেন।

মেলোনির এই পদক্ষেপ ইইউ-এর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক আরও দৃঢ় করতে সহায়তা করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এই বৈঠকের মূল উদ্দেশ্য হলো, দুই পক্ষের মধ্যে বিদ্যমান বাণিজ্য বিরোধ কমিয়ে আনা এবং ভবিষ্যৎ সম্পর্কের একটি রূপরেখা তৈরি করা।

ট্রাম্প ইতোমধ্যেই ইইউ পণ্যগুলির উপর ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, যদিও পরে তা ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করা হয়।

বর্তমানে, ইইউ-এর অধিকাংশ দেশের উপর ১০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর রয়েছে, যা গত ৯ এপ্রিল থেকে বহাল আছে।

বৈঠকের আগে, মেলোনি ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডের লিয়েনের সঙ্গে আলোচনা করেন।

জার্মানির প্রাক্তন চ্যান্সেলর ওলাফ স্কোলজ এবং তাঁর উত্তরসূরি ফ্রিডরিশ মের্ৎজও মেলোনির সঙ্গে এই বিষয়ে কথা বলেছেন বলে জানা যায়।

যদিও স্কোলজ ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের সুযোগ পাননি।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, মেলোনি ট্রাম্পের বাণিজ্য শুল্কের বিরোধিতা করলেও ইইউ-এর সদস্য হিসেবে ইতালির স্বার্থ রক্ষার জন্য একটি ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থান নেওয়ার চেষ্টা করছেন।

ইতালির এই পদক্ষেপ ইউরোপীয় মিত্রদের মধ্যে কিছুটা উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।

তাঁদের আশঙ্কা, মেলোনির সঙ্গে ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠতা ইইউ-এর মধ্যে ঐক্যের অভাব তৈরি করতে পারে, যা বাণিজ্য আলোচনাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।

ইতালির একটি বিরোধী দলের নেতা এনরিকো বর্গি মনে করেন, প্রধানমন্ত্রীর উচিত যুক্তরাষ্ট্র এবং ইইউ-এর মধ্যে আলোচনা পুনরায় শুরু করার ব্যবস্থা করা, যা ইতালির অর্থনৈতিক ও উৎপাদনশীল খাতের জন্য স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করবে।

উল্লেখ, ইইউ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে ইতালি তৃতীয় স্থানে রয়েছে।

যদিও মেলোনির দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, ইতালির পণ্যের উপর শুল্ক ছাড়ের জন্য তিনি কোনো বিশেষ প্রস্তাব পেশ করবেন না।

বৈঠকে ন্যাটো (NATO)-এর সদস্য রাষ্ট্রগুলোর সামরিক ব্যয় জিডিপি-র ২ শতাংশে উন্নীত করার বিষয়েও আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

বর্তমানে ইতালির সামরিক ব্যয় জিডিপির ১.৪৯ শতাংশ, যা ইউরোপের অন্যান্য দেশের তুলনায় কম।

এই সফর মেলোনির হোয়াইট হাউসে তৃতীয় সফর।

এর আগে তিনি জো বাইডেনের সময়েও সেখানে গিয়েছিলেন।

শুক্রবার, মেলোনি ট্রাম্পের ডেপুটি জে ডি ভেন্সের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করবেন, যিনি সম্প্রতি ইউরোপের বিরুদ্ধে কিছু মন্তব্য করেছিলেন।

ভেন্স ইস্টার উইকেন্ডে ভ্যাটিকানের সেক্রেটারি অফ স্টেট কার্ডিনাল পিট্রো পারোলিনের সঙ্গেও মিলিত হবেন।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *