বদলার আগুনে পুড়ছে অর্থনীতি? পাওয়েলকে সরাতে উঠেপড়ে ট্রাম্প!

যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ প্রধানের ওপর ট্রাম্পের আক্রমণ: অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিয়ে উদ্বেগ।

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক, ফেডারেল রিজার্ভের (ফেড) প্রধান জেরোম পাওয়েলের কঠোর সমালোচনা করেছেন। ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ দেশের অর্থনৈতিক নীতি এবং স্থিতিশীলতা নিয়ে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ট্রাম্পের এই ধরনের মন্তব্য বাজারের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

ট্রাম্পের অভিযোগ, পাওয়েল সুদের হার দ্রুত কমানোর ব্যাপারে পদক্ষেপ নিচ্ছেন না। ট্রাম্পের মতে, সুদের হার কমালে আমেরিকানরা সহজে ঋণ নিতে পারবে, যা বাড়ি কেনা এবং ব্যবসার প্রসারে সহায়তা করবে।

এছাড়াও, এর মাধ্যমে ভোক্তাদের আস্থা বাড়বে এবং শেয়ার বাজারেরও উন্নতি হবে। ফেডারেল রিজার্ভ গত বছর কয়েক দফা সুদের হার কমালেও, বর্তমানে তারা অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা এবং মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কায় সেই ধারা থেকে সরে এসেছে।

ট্রাম্পের এই সমালোচনার কারণ হিসেবে অনেকে মনে করছেন, তিনি আসন্ন নির্বাচনে অর্থনৈতিক সাফল্যের কৃতিত্ব নিজের পক্ষে রাখতে চাইছেন। যদি বাণিজ্য যুদ্ধ অব্যাহত থাকে এবং কোনো চুক্তি না হয়, তাহলে তিনি এর জন্য পাওয়েলকে দায়ী করতে পারেন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বাধীনতা রক্ষা করা জরুরি। রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ মুক্ত একটি স্বাধীন ব্যাংক-ই অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে পারে।

ফেডারেল রিজার্ভের ভূমিকা হলো মূল্য স্থিতিশীলতা এবং কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা। অনেক সময় এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য নীতিনির্ধারকদের স্বল্পমেয়াদী চাহিদার সঙ্গে তাদের বিরোধ হতে পারে।

উদাহরণস্বরূপ, বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক, বাংলাদেশ ব্যাংক-এর কথা বলা যেতে পারে, যা দেশের অর্থনীতির ব্যবস্থাপনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ফেডারেল রিজার্ভের মতো, বাংলাদেশ ব্যাংকও দেশের আর্থিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে কাজ করে।

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পের ক্ষমতা রয়েছে ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ারম্যানকে অপসারণ করার। তবে, এমন কোনো পদক্ষেপ নিলে তা বাজারের জন্য মারাত্মক উদ্বেগের কারণ হবে।

এমন পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থাহীনতা তৈরি হতে পারে এবং মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে।

বর্তমানে, ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতির কারণে অনেক পণ্যের দাম বাড়ছে এবং কিছু ক্ষেত্রে সংকটও দেখা যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে, ভোক্তাদের আস্থা কমে যাচ্ছে এবং ব্যবসায়ীরাও তাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা করতে দ্বিধা বোধ করছেন।

যদি ট্রাম্প পাওয়েলকে অপসারণ নাও করেন, শুধু এমন ইঙ্গিত দিলেও বিনিয়োগকারীদের মধ্যে অস্থিরতা সৃষ্টি হতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সুদের হার নির্ধারণের মতো গুরুত্বপূর্ণ নীতি ফেডারেল রিজার্ভের মতো একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠানের হাতেই থাকা উচিত। এর মাধ্যমে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত থেকে একটি স্থিতিশীল এবং নির্ভরযোগ্য অর্থনৈতিক পরিবেশ বজায় রাখা সম্ভব।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *