ফ্লোরিডা স্টেট ইউনিভার্সিটিতে (FSU) বন্দুক হামলার ঘটনা, শোকস্তব্ধ ক্যাম্পাস।
যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের টল্লাহাসিতে অবস্থিত ফ্লোরিডা স্টেট ইউনিভার্সিটিতে (FSU) বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে দুই জন নিহত এবং পাঁচ জন আহত হয়েছে।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবারের এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, হামলাকারী ছিলেন ঐ বিশ্ববিদ্যালয়েরই এক শিক্ষার্থী এবং তিনি স্থানীয় শেরিফের ডেপুটির পুত্র।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, গুলির শব্দ শোনার পরেই ছাত্র-শিক্ষকরা আত্মরক্ষার্থে বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নিতে শুরু করেন। অনেকেই ক্লাসরুমের দরজা বন্ধ করে ভেতরে অবস্থান নেন এবং জরুরি অবস্থার সংকেত পাওয়ার পর লাইট বন্ধ করে দেন।
ঘটনার আকস্মিকতায় ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে চরম ভীতি ছড়িয়ে পড়ে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র জেইডেন ডি’ওনোফ্রিও সিএনএনকে জানান, “এমন একটা পরিস্থিতিতে যখন বন্ধুদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়, সেই অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন।” আরেক শিক্ষার্থী হোল্ডেন মামুলা জানান, “গণহারে গুলির এই ঘটনাগুলো আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর গভীর প্রভাব ফেলে। এমন ঘটনার শিকার না হলে এর তীব্রতা অনুভব করা সম্ভব নয়।”
হামলার সময়কার একটি ভিডিওতে দেখা যায়, গুলির শব্দে ভীত কিছু মানুষ জীবন বাঁচানোর জন্য ছোটাছুটি করছে, অনেকে ঝোপের আড়ালে আশ্রয় নিচ্ছে।
বন্দুকধারীর এলোপাতাড়ি গুলিতে হতাহত হয় অনেকে। গুলির আওয়াজ শুনে ছাত্ররা তাদের ব্যাগ ও জুতা ফেলে দিগ্বিদিক ছুটতে থাকে।
আতঙ্কিত শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস সংলগ্ন সেন্ট থমাস মোর ক্যাথিড্রালে আশ্রয় নেয়। ফাদার লুক ফ্যারাবো জানান, ঘটনার সময় তিনি একটি জন্মদিনের অনুষ্ঠানে ছিলেন।
গুলির শব্দ শুনে তিনি দ্রুত গির্জায় যান এবং সেখানে আশ্রয় নেওয়া লোকজনের মধ্যে এক গভীর ভীতির চিত্র দেখতে পান।
ঘটনার পর জরুরি বিভাগের কর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। ক্যাম্পাসজুড়ে মোতায়েন করা হয় বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্যকে।
ফ্লোরিডার এই ঘটনা আবারও যুক্তরাষ্ট্রের বন্দুক সহিংসতার ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরেছে। দেশটিতে বন্দুকের ব্যবহার নিয়ে বিতর্ক দীর্ঘদিনের।
“গান ভায়োলেন্স আর্কাইভ”-এর তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরে এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে ৮১টি বড় ধরনের বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নিহতদের পরিবারকে সমবেদনা জানিয়েছে এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছে। ইস্টার সান্নিধ্যে এই ধরনের ঘটনায় সেখানকার মানুষের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
ফাদার ফ্যারাবো বলেন, “এ বছর আমরা ভিন্নভাবে পবিত্র সপ্তাহ উদযাপন করব।”
তথ্য সূত্র: সিএনএন