কানাডার আসন্ন নির্বাচনে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বীদের মধ্যে বিতর্কের ঝড়।
কানাডায় আসন্ন সাধারণ নির্বাচনের আগে দেশটির রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতা। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ বিতর্কে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি এবং প্রধান বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টির নেতা পিয়ের পোলিয়েরের মধ্যে তীব্র বাক্য বিনিময় হয়।
বিতর্কের মূল বিষয় ছিল দেশের অর্থনীতি, জীবনযাত্রার ব্যয় এবং সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সম্ভাব্য নীতিগুলো নিয়ে কানাডার ভবিষ্যৎ।
বিতর্কে পোলিয়ের কার্নিকে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সরকারের একজন অংশ হিসেবে চিহ্নিত করার চেষ্টা করেন। তিনি অভিযোগ করেন, কার্নি সরকারের নীতিগুলো দেশের সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার মানকে আরও কঠিন করে তুলবে।
পোলিয়েরের মূল অভিযোগ ছিল, ট্রুডোর সরকারের আমলে অর্থনৈতিক দুর্বলতার কারণে কানাডা যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য নীতির কাছে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। তিনি বিশেষ করে জ্বালানি খাতে সরকারের নীতির সমালোচনা করেন।
পোলিয়েরের মতে, সরকারের ভুল পদক্ষেপের কারণে কানাডার তেল রপ্তানির সুযোগ কমে গেছে, যা দেশের অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
অন্যদিকে, প্রধানমন্ত্রী কার্নি বিতর্কে ট্রাম্পকে কানাডার জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি হিসেবে তুলে ধরেন। তার মতে, ট্রাম্প এমন কিছু নীতি নিতে পারেন যা কানাডার স্বার্থের পরিপন্থী।
কার্নি স্পষ্ট করে বলেন, ট্রাম্প কানাডাকে দুর্বল করতে চাইছেন। তিনি এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান এবং ট্রাম্পের নীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর অঙ্গীকার করেন।
কার্নি ব্যক্তিগত খাতের অভিজ্ঞতাকে সরকার পরিচালনায় কাজে লাগানোর কথা বলেন।
বিতর্কে অন্যান্য দলের নেতারাও অংশ নেন এবং কার্নিকে বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন করেন। বিশেষ করে, তার কর্পোরেট জগতের অভিজ্ঞতা নিয়ে তারা প্রশ্ন তোলেন।
তাদের আশঙ্কা, কার্নি হয়তো শ্রমিক শ্রেণির স্বার্থের কথা সেভাবে বিবেচনা করবেন না। কার্নি অবশ্য তার ব্যক্তিগত খাতের অভিজ্ঞতাকে সরকারের জন্য উপকারী হিসেবে উল্লেখ করেন এবং দেশের মানুষের প্রতি তার দায়বদ্ধতার কথা জানান।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বিতর্কের আগে জনমত জরিপে কার্নি’র দল কিছুটা এগিয়ে ছিল। তবে, নির্বাচনের ফল এখনো অনিশ্চিত।
জাস্টিন ট্রুডো পদত্যাগ করার পর থেকে লিবারেল পার্টি জনসমর্থন ফিরে পেতে শুরু করেছে। বিতর্কের পর দলটির অবস্থান আরও সুসংহত হবে কিনা, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
আগামী ২৮ এপ্রিল অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে কানাডার ভোটাররা তাদের নতুন সরকার নির্বাচন করবে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান