আতঙ্কের সৃষ্টি: ইয়েমেনে মার্কিন হামলায় নিহত ডজন খানেক!

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলায় ইয়েমেনের একটি তেল বন্দরে ব্যাপক হতাহতের খবর পাওয়া গেছে। শুক্রবার ভোরে প্রকাশিত খবরে জানা যায়, হুতি বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রিত রাস ইসা তেল বন্দরে চালানো হামলায় অন্তত ৩৩ জন নিহত এবং ৮০ জনের বেশি আহত হয়েছেন।

যদিও এই হতাহতের সংখ্যা এখনো নিশ্চিত করা হয়নি। মার্কিন সামরিক বাহিনীর সেন্ট্রাল কমান্ডের দাবি, এই হামলা চালানো হয়েছে হুতি বিদ্রোহীদের ‘অবৈধ’ উপার্জনের পথ বন্ধ করতে।

তাদের মতে, এই অর্থ বিগত ১০ বছর ধরে পুরো অঞ্চলে সন্ত্রাস চালানোর কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে।

মার্কিন সামরিক বাহিনী এক বিবৃতিতে জানায়, এই হামলার উদ্দেশ্য ছিল না ইয়েমেনের সাধারণ মানুষের ক্ষতি করা। তারা আরও জানায়, ইয়েমেনের মানুষজন হুতিদের শাসন থেকে মুক্তি পেতে চায় এবং শান্তিপূর্ণ জীবন যাপন করতে আগ্রহী।

তবে হামলায় হতাহতের কোনো ঘটনার কথা তারা স্বীকার করেনি।

হুতি বিদ্রোহীদের পরিচালিত আল-মাসিরাহ স্যাটেলাইট নিউজ চ্যানেল হামলার পর সেখানকার ধ্বংসস্তূপের ছবি প্রকাশ করেছে। ছবিতে দেখা যায়, নিহতদের মধ্যে প্যারামেডিক কর্মী এবং সাধারণ নাগরিকও রয়েছেন।

হামলার ফলে সেখানে একটি বড় ধরনের বিস্ফোরণ ঘটে এবং আগুন ধরে যায়।

গত ৯ এপ্রিল, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর ইয়েমেনে তেল সরবরাহ বন্ধের বিষয়ে সতর্কবার্তা জারি করে। বিবৃতিতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র কোনো দেশ বা বাণিজ্যিক সংস্থাকে হুতিদের মতো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে সহায়তা করতে দেবে না।

বিশেষ করে, হুতি নিয়ন্ত্রিত বন্দরে তেল সরবরাহ এবং জাহাজ থেকে তেল খালাস করার বিষয়ে কড়া হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়।

বিশ্লেষণে দেখা গেছে, প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের তুলনায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের সময়ে হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের অভিযান আরও ব্যাপক রূপ নিয়েছে। আগে শুধুমাত্র ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ কেন্দ্রগুলো লক্ষ্য করে হামলা চালানো হলেও, এখন সরাসরি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের ওপর এবং শহরগুলোতে বোমা হামলা চালানো হচ্ছে।

জানা যায়, গাজা উপত্যকায় ত্রাণ সহায়তা প্রবেশে ইসরায়েলের বাধা দেওয়ার প্রতিবাদে হুতি বিদ্রোহীরা আবারও ইসরায়েলি জাহাজ লক্ষ্য করে হামলা চালানোর হুমকি দেয়।

এরপরই নতুন করে এই বিমান হামলার ঘটনা ঘটে। হুতিরা ইসরায়েলি জাহাজ বলতে ঠিক কী বোঝাচ্ছে, তা এখনো স্পষ্ট নয়। ফলে অনেক জাহাজ হামলার ঝুঁকিতে রয়েছে।

২০২৩ সালের নভেম্বর মাস থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত হুতি বিদ্রোহীরা ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ব্যবহার করে ১০০টির বেশি বাণিজ্যিক জাহাজে হামলা চালিয়েছে।

এর মধ্যে দুটি জাহাজ ডুবে যায় এবং চারজন নাবিকের মৃত্যু হয়। এছাড়া, তারা যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধজাহাজগুলোকেও লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছিল, যদিও সেগুলোতে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।

ট্রাম্প প্রশাসন জানিয়েছে, হুতিদের বিরুদ্ধে তাদের বিমান হামলার সঙ্গে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির প্রসারের বিষয়টিও জড়িত।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *