তাইওয়ানের সমর্থনে মার্কিন আইনপ্রণেতাদের সফর: চীনকে কড়া বার্তা!

যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতাদের তাইওয়ান সফর: চীনের সঙ্গে উত্তেজনার মধ্যে তাইওয়ানের প্রতি সমর্থন

তাইওয়ানের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখতে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে তাইওয়ান সফর করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতাদের একটি প্রতিনিধি দল। এই সফরে রিপাবলিকান ও ডেমোক্রেট উভয় দলের সদস্যরাই ছিলেন। ডোনাল্ড ট্রাম্পের সময়ে তাইওয়ানের ওপর শুল্ক আরোপ এবং বিভিন্ন মন্তব্যের পর তাইওয়ানের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। এই সফর সেই সন্দেহ দূর করতে সহায়ক হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে চলমান বাণিজ্য যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে তাইওয়ানের এই সফর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চীন তাইওয়ানকে নিজেদের অংশ হিসেবে দাবি করে এবং প্রয়োজনে শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে দ্বীপটিকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে আনতে পারে বলে প্রায়ই হুমকি দিয়ে থাকে। এমন পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতাদের এই সফর তাইওয়ানের জন্য একটি শক্তিশালী বার্তা বহন করে।

সফরে আসা আইনপ্রণেতারা তাইওয়ানের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন এবং তাদের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তাইওয়ানের নেতারাও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ চুক্তি করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তারা ট্রাম্প প্রশাসনের উদ্বেগকে গুরুত্ব সহকারে নিয়েছেন এবং সে অনুযায়ী কাজ করছেন বলে জানিয়েছেন। তাইওয়ান এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে চিপ উৎপাদন খাতে ১০০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে।

শুধু তাই নয়, তাইওয়ান তাদের সামরিক শক্তি বাড়ানোর দিকেও মনোযোগ দিচ্ছে। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে তাইওয়ান তাদের সামরিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে চাইছে, যাতে তারা চীনের সম্ভাব্য আগ্রাসন প্রতিহত করতে পারে। তারা সামরিক ব্যয় বাড়িয়ে জিডিপির ৩ শতাংশে উন্নীত করার পরিকল্পনা করছে, যা বর্তমানে প্রায় ২.৫ শতাংশ। এছাড়া, ড্রোন যুদ্ধ সহ বিভিন্ন সামরিক খাতে তারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সহযোগিতা বাড়াতে আগ্রহী।

এই সফরকালে যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতারা তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট লাই চিং-তে, প্রতিরক্ষামন্ত্রী ওয়েলিংটন কু এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জোসেফ উ-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। রিপাবলিকান সিনেটর টেড বাডও এই প্রতিনিধি দলের সঙ্গে ছিলেন।

যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে তাইওয়ানের প্রতি এই সমর্থন চীনের জন্য একটি সতর্কবার্তা। যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতারা চীনকে বুঝিয়ে দিতে চাইছেন যে তাইওয়ানের প্রতি তাদের সমর্থন অটুট রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য যুদ্ধ এবং তাইওয়ানকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট এই উত্তেজনাকর পরিস্থিতি আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। এই অঞ্চলের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে তাইওয়ানের পাশে যুক্তরাষ্ট্রের এই অবস্থান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্লেষকরা মনে করেন, তাইওয়ানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপ একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *