মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চাঞ্চল্যকর সিদ্ধান্ত! চীনা জাহাজে কি তবে…

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি তাদের বন্দরে ভেড়ার জন্য চীন থেকে নির্মিত বা চীন-মালিকানাধীন জাহাজগুলোর উপর নতুন মাশুল আরোপের ঘোষণা করেছে। এই পদক্ষেপটি মূলত যুক্তরাষ্ট্রের জাহাজ নির্মাণ শিল্পকে চীনের একচেটিয়া আধিপত্য থেকে পুনরুদ্ধারের একটি প্রচেষ্টা।

এই সিদ্ধান্তটি দুই দেশের মধ্যে চলমান বাণিজ্য যুদ্ধেরই অংশ, যা বিশ্ব অর্থনীতিতে গভীর প্রভাব ফেলতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি (ইউএসটিআর) বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে জানায়, নতুন এই মাশুল আগামী ১৪ অক্টোবর থেকে কার্যকর হবে। এই মাশুল চীন থেকে নির্মিত এবং চীন-মালিকানাধীন জাহাজগুলোর উপর তাদের বহন করা মালামাল অথবা নেট টনেজের উপর ভিত্তি করে ধার্য করা হবে।

এই মাশুল ধীরে ধীরে বৃদ্ধি করা হবে। শুরুতে প্রতি নেট টনে ৫০ ডলার মাশুল ধার্য করা হবে, যা আগামী তিন বছরে প্রতি বছর ৩০ ডলার করে বাড়ানো হবে।

বিকল্প হিসেবে, প্রতিটি কন্টেইনার খালাসের জন্য ১২০ ডলার মাশুল ধার্য করারও প্রস্তাব করা হয়েছে, যা তিন বছর পর ২৫০ ডলারে পৌঁছাবে।

যদি কোনো চীনা জাহাজের মালিকানা অন্য কোনো দেশের হয়, তবে তাদের ক্ষেত্রে প্রতি নেট টনে ১৮ ডলার মাশুল ধার্য করা হবে। এই ক্ষেত্রেও, মাশুল প্রতি বছর ৫ ডলার করে বৃদ্ধি পাবে।

এই পদক্ষেপের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র সরকার চাইছে, তারা তাদের অভ্যন্তরীণ জাহাজ নির্মাণ শিল্পকে শক্তিশালী করতে পারবে। কারণ, বর্তমানে এই শিল্পে চীনের একচেটিয়া প্রভাব রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি জেমিসন গ্রিয়ার এক বিবৃতিতে বলেছেন, “জাহাজ এবং জাহাজ চলাচল আমেরিকার অর্থনৈতিক নিরাপত্তা এবং বাণিজ্যের অবাধ প্রবাহের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”

এই নতুন মাশুল আরোপের ফলে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চলমান বাণিজ্য উত্তেজনা আরও বাড়বে বলেই ধারণা করা হচ্ছে। এর আগে, যুক্তরাষ্ট্র চীন থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ১৪৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক বৃদ্ধি করেছে।

চীনও এর জবাবে যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর ১২৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করেছে।

তবে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি শুল্ক বৃদ্ধি বন্ধ করার ইঙ্গিত দিয়েছেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “আমি চাই না শুল্ক আরও বাড়ুক, কারণ একটা পর্যায়ে মানুষ জিনিসপত্র কেনা বন্ধ করে দেবে।”

এই পরিস্থিতিতে, বিশ্ব অর্থনীতিতে এর প্রভাব কেমন হবে, সেদিকে এখন সবার নজর। বাণিজ্য যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হলে তা বিশ্বজুড়ে পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিতে পারে এবং অর্থনৈতিক মন্দা ডেকে আনতে পারে বলে অনেক অর্থনীতিবিদ আশঙ্কা করছেন।

বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর উপরও এর একটা প্রভাব পড়তে পারে, বিশেষ করে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যাদের ব্যবসা-বাণিজ্য রয়েছে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *