যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক অঙ্গরাজ্যে এক হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটেছে। পরিবারের সদস্যরা যখন তাঁদের প্রিয়জনের মৃত্যুতে শোক পালন করছিলেন, ঠিক তখনই এক অপ্রত্যাশিত খবরে তাঁদের জীবনে নেমে আসে চরম বিপর্যয়।
দীর্ঘদিন ধরে নিখোঁজ থাকা শানিস ক্রুস নামের এক নারীর পরিবারকে পুলিশ জানায়, ফেব্রুয়ারি মাসে তাঁর দেহের কিছু অংশ পাওয়া গেছে। এরপর পরিবারের সদস্যরা যখন তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন করেছেন, তার সাত মাস পর তাঁরা জানতে পারেন, শানিস আসলে জীবিত!
ঘটনার সূত্রপাত হয় ২০২১ সালের জুলাই মাসে, যখন শানিস ক্রুস নামের আঠাশ বছর বয়সী এক নারীর কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। পরিবারের সদস্যরা তাঁর সন্ধান চেয়ে হন্যে হয়ে ঘুরছিলেন।
অবশেষে, চলতি বছরের এপ্রিলে পুলিশ জানায়, শানিসের দেহাবশেষ পাওয়া গেছে এবং ময়নাতদন্তে তাঁর মৃত্যুর কারণ হিসেবে মাদক ওভারডোজের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়। পরিবারের শোকের গভীরতা আরও বাড়ে, যখন তারা জানতে পারে, তাঁদের প্রিয়জনকে হয়তো আর জীবিত পাওয়া যাবে না।
পরিবারের সদস্যরা জানান, তাঁরা যেহেতু শানিসের মরদেহ দেখেননি, তাই তাঁরা বিষয়টির সত্যতা নিয়ে সন্দিহান ছিলেন। এরপর তাঁরা তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন করেন এবং স্মৃতিচারণ করে শোক প্রকাশ করেন।
তাঁরা তাঁদের স্বজন হারানোর বেদনা বুকে নিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চেষ্টা করছিলেন।
কিন্তু নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে তাঁদের জীবনে আসে এক নতুন মোড়। অপরিচিত একজন তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, শানিস ক্রুস নামের ওই নারী আসলে জীবিত এবং তিনি সম্প্রতি তাঁর একটি অনুষ্ঠানে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করেছেন।
ওই ব্যক্তি শানিসের একটি ছবিও পাঠান, যা দেখে পরিবারের সদস্যরা হতবাক হয়ে যান।
খবরটি পাওয়ার পর তাঁরা দ্রুত স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। মনরো কাউন্টি মেডিকেল পরীক্ষকের কার্যালয় জানায়, তাঁদের কাছে থাকা দাঁতের পরীক্ষার তথ্যের সঙ্গে শানিসের পাওয়া দেহের মিল রয়েছে।
পরিবারের সদস্যরা জানান, এই ঘটনায় তাঁরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন। তাঁরা তাঁদের পরিবারের একজন সদস্যকে হারিয়েছেন ভেবে, তাঁর স্মৃতি হিসেবে কিছু জিনিস তৈরি করেছিলেন।
শানিতার ভাষায়, “পুলিশ যখন এসে জানায় শানিসের মৃতদেহ পাওয়া গেছে, তখন আমাদের যে অনুভূতি হয়েছিল, তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। আমরা কখনোই সেই কষ্ট ভুলতে পারব না।”
বর্তমানে পরিবারটি তাদের আইনি অধিকার আদায়ের জন্য আইনজীবীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে তাঁদের শেষকৃত্যের খরচ দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হলেও, তাঁরা ন্যায়বিচারের জন্য আইনি পদক্ষেপ নিতে চান।
পরিবারের সদস্যরা এখন চান শানিস তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করুক। শানিতার ভাষ্যে, “আমি তাকে ভালোবাসি। আমি জানি, সে কেমন অনুভব করছে। আমি চাই, সে জানুক, আমাদের মধ্যে যাই ঘটুক না কেন, আমি তাকে ভালোবাসি।”
এ বিষয়ে মনরো কাউন্টি মেডিকেল পরীক্ষকের কার্যালয় জানিয়েছে, তারা ঘটনাটি খতিয়ে দেখছে। তবে গোপনীয়তার কারণে তাঁরা নির্দিষ্ট কোনো ঘটনার বিষয়ে মন্তব্য করতে পারবে না।
তথ্য সূত্র: পিপল