ফিলিস্তিনের শিশুর ছবি: যুদ্ধের ক্ষত, কাঁদছে বিশ্ব!

ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় দুই হাত হারানো এক শিশুর হৃদয়বিদারক ছবি ‘ওয়ার্ল্ড প্রেস ফটো অব দ্য ইয়ার’ পুরস্কার জিতেছে। ছবিটির মাধ্যমে গাজায় চলমান যুদ্ধের ভয়াবহতা এবং এর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাবের প্রতিচ্ছবি তুলে ধরা হয়েছে।

ছবিটি তুলেছেন ফিলিস্তিনের আলোকচিত্রী সামার আবু এলুফ। ছবিতে দেখা যায়, নয় বছর বয়সী মাহমুদ আজ্জুরকে, যে গাজা শহরের ওই বিমান হামলায় দুটি হাত হারিয়েছে। চিকিৎসার জন্য মাহমুদ ও তার পরিবারকে কাতারের রাজধানী দোহায় নেওয়া হয়, যেখানে সামার আবু এলুফের বসবাস।

পুরস্কারজয়ী ছবিটি সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে বিচারকদের একজন, ‘লে মন্ড’ ম্যাগাজিনের ফটোগ্রাফি ডিরেক্টর লুসি কন্টিসিও বলেন, “ছবিটি আলো ও অন্ধকারের, সৌন্দর্য ও বেদনার এক দারুণ মিশ্রণ, যা আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।

যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় মানবিক বিপর্যয় এখনো চলছে। জাতিসংঘের তথ্যমতে, ইসরায়েলি হামলায় নিহতদের প্রায় অর্ধেকই নারী ও শিশু। গত ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর ইসরায়েল গাজায় ব্যাপক সামরিক অভিযান শুরু করে। এই ঘটনার ফলস্বরূপ, হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছে এবং সেখানকার বাসিন্দারা বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

ওয়ার্ল্ড প্রেস ফটো কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক জুমানা এল জেইন খৌরি বলেন, “ছবিটি একটি নীরব বার্তা দেয়, যা অনেক কথা বলে। এটি শুধু একটি ছেলের গল্প নয়, বরং একটি বৃহত্তর যুদ্ধের গল্প, যা প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে মানুষকে প্রভাবিত করবে।

এ বছর প্রায় ১৪০টি দেশের ৩ হাজার ৭৭৮ জন আলোকচিত্রীর জমা দেওয়া প্রায় ৬০ হাজার ছবির মধ্যে থেকে বিজয়ী ছবিটি নির্বাচন করা হয়েছে।

এছাড়াও, পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত হওয়া অন্যান্য ছবিগুলোর মধ্যে রয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের মেক্সিকো সীমান্ত অতিক্রম করা চীনা অভিবাসীদের ছবি এবং আমাজনে খরার কারণে শুকিয়ে যাওয়া একটি নদীর পাশে এক যুবকের হেঁটে যাওয়ার ছবি। এছাড়াও, আঞ্চলিক বিভাগে নির্বাচিত ছবিগুলোর মধ্যে রয়েছে ব্রাজিলের সালgado ফিলহো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বন্যার পানিতে একটি বোয়িং বিমানের ছবি এবং সুদানে একটি বিয়ের ছবি।

পুরস্কার বিজয়ী ছবিগুলো বর্তমানে প্রদর্শিত হচ্ছে। আগামী ১৮ এপ্রিল, নেদারল্যান্ডসের আমস্টারডামে এই প্রদর্শনীর উদ্বোধন করা হয়। এরপর এটি লন্ডন, জাকার্তা, সিডনি এবং মেক্সিকো সিটিসহ বিশ্বের বিভিন্ন শহরে প্রদর্শিত হবে।

তথ্যসূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *