পশ্চিমী জাতীয়তাবাদ: ট্রাম্পের কানে ফিসফিস করে কি বললেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী?

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির সাম্প্রতিক সাক্ষাৎ নিয়ে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে নতুন আলোচনা শুরু হয়েছে। শ্বেত হাউসে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে দুই নেতার মধ্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়, যেখানে তাদের মধ্যে ‘পাশ্চাত্য জাতীয়তাবাদ’ ধারণাটির মিল খুঁজে পাওয়া যায়। এই আলোচনার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক এবং বিভিন্ন দেশের রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে নতুন করে ভাবনার অবকাশ তৈরি হয়েছে।

বৈঠকে, মেলোনি এবং ট্রাম্প উভয়েই নিজেদের মধ্যে একটি সাধারণ রাজনৈতিক চিন্তাধারা খুঁজে পান। ইতালির প্রধানমন্ত্রীর দল ব্রাদার্স অফ ইতালি’র সঙ্গে ট্রাম্পের সম্পর্ক বেশ ভালো, এবং তাদের মধ্যে আলোচনা হয় বাণিজ্য, ন্যাটোর ভূমিকা ও ‘ওয়েস্টার্ন নেশনালিজম’-এর মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়ে। মেলোনি ‘পাশ্চাত্য জাতীয়তাবাদ’-এর ধারণা তুলে ধরেন, যেখানে তিনি পশ্চিমা বিশ্বের সংস্কৃতি ও সভ্যতার গুরুত্বের কথা বলেন।

আলোচনায় ইউক্রেন যুদ্ধ এবং দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি নিয়েও কথা হয়। ট্রাম্পের বক্তব্যে ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য সরাসরি জেলেনস্কিকে দায়ী না করলেও, তিনি এর ব্যবস্থাপনায় অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। তিনি বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী করেন। অন্যদিকে, মেলোনি ইউক্রেনকে পশ্চিমা সমর্থন অব্যাহত রাখার পক্ষে মত দেন।

ন্যাটোতে ইতালির সামরিক ব্যয়ের বিষয়েও আলোচনা হয়। বর্তমানে ইতালির সামরিক ব্যয় জিডিপির ১.৫ শতাংশের নিচে, যা ন্যাটোর সদস্য দেশগুলোর জন্য নির্ধারিত ২ শতাংশের কম। ট্রাম্প এই বিষয়ে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করে ন্যাটোর সদস্য দেশগুলোকে তাদের সামরিক ব্যয় বাড়ানোর আহ্বান জানান।

আলোচনার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল অভিবাসন সমস্যা। এই ইস্যুতে মেলোনি ও ট্রাম্পের মধ্যে একটি সাধারণ সুর শোনা যায়, যা তাদের মধ্যেকার রাজনৈতিক বোঝাপড়ার ইঙ্গিত দেয়।

এই বৈঠকের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলোর মধ্যেকার সম্পর্ক নিয়ে নতুন করে আলোচনার সূত্রপাত হয়েছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনে করেন, মেলোনি ও ট্রাম্পের মধ্যেকার এই আলোচনা ভবিষ্যতের আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে।

তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *