ড্রেক বনাম ইউনিভার্সাল মিউজিক গ্রুপের (ইউএমজি) আইনি লড়াই নতুন মোড় নিয়েছে, যেখানে র্যাপ তারকা কেনড্রিক লামারের একটি গানের কারণে সম্মানহানির অভিযোগ এনেছেন ড্রেক। খবর অনুযায়ী, ২০২৩ সালের সুপার বোলের হাফটাইম শো’তে লামারের পরিবেশনা এই বিতর্কে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
শুরুতে, ড্রেক ইউনিভার্সাল মিউজিক গ্রুপের (ইউএমজি) বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। তাঁর অভিযোগ ছিল, ইউএমজি এমন একটি গান প্রকাশ করেছে, যা তাঁকে “শিশু যৌন নির্যাতনকারী” হিসেবে চিহ্নিত করে তাঁর সম্মানহানি করেছে।
গানটি ছিল কেনড্রিক লামারের, যার শিরোনাম “নট লাইক আস”। গানটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে এবং বিভিন্ন চার্টে শীর্ষস্থান দখল করে। শুধু তাই নয়, গানটি ২০২৩ সালের গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে সেরা গানের পুরস্কারসহ পাঁচটি বিভাগে পুরস্কার জেতে।
মামলার পরবর্তী পর্যায়ে, ড্রেক তাঁর অভিযোগের সঙ্গে সুপার বোলের পারফরম্যান্সের বিষয়টি যুক্ত করেন। তাঁর আইনজীবীদের দাবি, সুপার বোলের মতো একটি বিশাল অনুষ্ঠানে লামারের পরিবেশনা জনসাধারণের মধ্যে ড্রেকের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের সত্যতা আরও দৃঢ় করেছে। এমনকি এর ফলে ড্রেক ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের প্রতি হুমকির পরিমাণও বেড়েছে।
যদিও লামার তাঁর পরিবেশনায় গানের বিতর্কিত কিছু শব্দ ব্যবহার করেননি, তবুও “আই হিয়ার ইউ লাইক ‘এম ইয়ং” লাইনটি ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে বলার মাধ্যমে দর্শকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন, যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পরে। ড্রেকের আইনজীবীদের মতে, লামার শব্দগুলো বাদ দিয়েছিলেন কারণ “প্রত্যেকেই জানে, মিথ্যাভাবে কাউকে ‘সার্টিফাইড পেডোফাইল’ (শিশু যৌন নির্যাতনকারী) হিসেবে চিহ্নিত করা মানহানিকর”।
এই বিষয়ে ইউনিভার্সাল মিউজিক গ্রুপের (ইউএমজি) পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ড্রেক তাঁর আইনজীবীদের দ্বারা ভুল পথে চালিত হচ্ছেন। কারণ, ড্রেকের সঙ্গে তাদের ১৬ বছরের সফল সম্পর্ক রয়েছে। এছাড়া, এই মামলার শুনানিতে ড্রেকের দল কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র (ডিসকভারি) চেয়েছিল, যা আদালত মঞ্জুর করেছে।
অন্যদিকে, টেনিস তারকা সেরেনা উইলিয়ামস, যিনি একসময় ড্রেকের সঙ্গে সম্পর্কে ছিলেন বলে শোনা যায়, সুপার বোলের অনুষ্ঠানে লামারের গানের সঙ্গে নেচেছিলেন। অনেকের ধারণা ছিল, সেরেনা সম্ভবত ড্রেক’কে ব্যঙ্গ করেছেন। তবে, সেরেনা এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
এদিকে, র্যাপ গানের জগতে শীর্ষস্থান দখলের লড়াইয়েও ড্রেক ও লামার একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বী। লামারের “লুথার” গানটি বর্তমানে বিলবোর্ড-এর এক নম্বর অবস্থানে রয়েছে। অন্যদিকে, ড্রেকের “নোকিয়া” গানটি দুই নম্বরে উঠে এসেছে।
এই মুহূর্তে, ড্রেকের করা মামলার ভবিষ্যৎ কী হবে, সেদিকে তাকিয়ে সঙ্গীত জগৎ। কারণ, এই মামলার রায় একদিকে যেমন ড্রেকের সম্মান রক্ষার বিষয়, তেমনই মিউজিক ইন্ডাস্ট্রির স্বাধীনতা এবং শিল্পীদের অধিকারের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর ওপর প্রভাব ফেলবে।
তথ্য সূত্র: