ভুয়া টোল ট্যাক্স টেক্সট মেসেজ: নিজেকে বাঁচান প্রতারণা থেকে
সাম্প্রতিক সময়ে, সারা বিশ্বজুড়ে অনলাইন জালিয়াতির ঘটনা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। এর মধ্যে অন্যতম একটি হলো, রাস্তায় চলাচলের সময় ব্যবহৃত টোল ট্যাক্স ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগ জানিয়ে আসা টেক্সট মেসেজ। এই ধরনের প্রতারণা বর্তমানে বাংলাদেশেও ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই)-এর তথ্য অনুযায়ী, গত বছর শুধু টোল সংক্রান্ত ভুয়া অভিযোগের সংখ্যা ছিল ৬০,০০০ এর বেশি। প্রতারকেরা সাধারণ মানুষকে টোল পরিশোধের কথা বলে টেক্সট মেসেজ পাঠাচ্ছে। এই মেসেজগুলোতে থাকা লিঙ্কে ক্লিক করলে ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য চুরি হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। অনেক সময় ভুয়া ওয়েবসাইটে প্রবেশ করিয়ে ব্যাংক ডিটেইলস হাতিয়ে নেওয়ারও চেষ্টা করা হয়।
প্রযুক্তি নিরাপত্তা বিষয়ক প্রতিষ্ঠান ম্যাকাফি’র এক গবেষণায় দেখা গেছে, গত জানুয়ারী থেকে ফেব্রুয়ারী মাসের মাঝামাঝি সময়ে আসা টেক্সট মেসেজগুলোর প্রায় ৭৬ শতাংশের বেশি-তেই সন্দেহজনক লিংক ছিল। অনেক ক্ষেত্রে, লিংকগুলোকে ছোট করার জন্য bit.ly-এর মতো ইউআরএল শর্টনার ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়াও, ওয়েবসাইটগুলোকে আসল প্রমাণ করার জন্য .vip, .top, এবং .xin-এর মতো ডোমেইন ব্যবহার করা হচ্ছে।
ম্যাকাফির নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং চিফ টেকনোলজি অফিসার স্টিভ গ্রোবম্যানের মতে, এই ধরনের প্রতারণার মূল কারণ হলো, স্ক্যামাররা ব্যবহারকারীর ভৌগোলিক অবস্থান সম্পর্কে জানতে পারে। তারা এরিয়া কোড ব্যবহার করে অথবা ডেটা ফাঁসের মাধ্যমে মানুষের বর্তমান বা আগের ঠিকানা খুঁজে বের করে। এরপর, সেই এলাকার টোল ট্যাক্স সংক্রান্ত ভুয়া মেসেজ পাঠিয়ে প্রতারণা করে।
এই ধরনের প্রতারণা থেকে বাঁচতে কিছু বিষয় মনে রাখা জরুরি।
- অপরিচিত নম্বর থেকে আসা কোনো লিংকে ক্লিক করবেন না।
- কোনো ওয়েবসাইটে ব্যক্তিগত তথ্য দেওয়ার আগে, ওয়েবসাইটটি আসল কিনা, তা ভালোভাবে যাচাই করুন।
- টোল কর্তৃপক্ষের আসল ওয়েবসাইট খুঁজে বের করে, তাদের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করুন।
- যদি কোনো সন্দেহজনক মেসেজ পান, তাহলে দ্রুত সাইবার ক্রাইম বিভাগে অভিযোগ করুন।
মনে রাখবেন, আপনার সামান্য অসচেতনতাও আপনাকে প্রতারণার শিকার বানাতে পারে। তাই, অনলাইনে লেনদেনের ক্ষেত্রে সবসময় সতর্ক থাকুন এবং নিজের ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষিত রাখুন।
তথ্য সূত্র: সিএনএন