ঐতিহাসিক প্রত্যাবর্তনে ম্যান ইউর রূপকথা! সেমিফাইনালে টিকিট নিশ্চিত

ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ‘মিরাকল’ প্রত্যাবর্তনে ইউরোপা লিগের সেমিফাইনালে।

ফুটবলপ্রেমীদের জন্য এক অসাধারণ রাত উপহার দিল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। বৃহস্পতিবার রাতে ইউরোপা লিগের কোয়ার্টার ফাইনালের দ্বিতীয় লেগে, নাটকীয়ভাবে অল্ড ট্র্যাফোর্ডে ফরাসি ক্লাব লিওঁকে ৭-৬ গোলে পরাজিত করে সেমিফাইনালে পৌঁছেছে তারা।

খেলার অতিরিক্ত সময়ে ম্যান ইউ-এর খেলোয়াড়দের অসাধারণ পারফরম্যান্সের সাক্ষী থাকল বিশ্ব।

ম্যাচের শুরুতে মনে হচ্ছিল যেন ইউনাইটেডের বিদায় ঘণ্টা বেজে গেছে। প্রিমিয়ার লিগে তাদের পারফর্মেন্স ছিলো খুবই হতাশাজনক, তালিকায় ১৪ নম্বরে অবস্থান করছিল তারা।

কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগে ২-২ গোলে ড্র করার পর, ঘরের মাঠে ২ গোলের লিড নিয়েও যেন খেই হারিয়ে ফেলেছিল তারা।

কিন্তু শেষ মুহূর্তে, খেলার মোড় ঘুরে যায়। অতিরিক্ত সময়ের শেষ ৬ মিনিটে তারা ৩টি গোল করে ৭-৬ ব্যবধানে জয় নিশ্চিত করে।

ম্যাচ শেষে প্রাক্তন ম্যান ইউ ডিফেন্ডার এবং টিএনটি স্পোর্টসের বিশেষজ্ঞ রিও ফার্দিনান্দ মন্তব্য করেন, “আমি ধারাভাষ্যে বলেছিলাম, এখান থেকে ফিরতে হলে অলৌকিক কিছু ঘটাতে হবে। এখন আমি সত্যিই বিশ্বাস করি, কারণ এটা ছিল অবিশ্বাস্য।

ম্যাচে প্রথমে এগিয়ে যায় ম্যান ইউ। ম্যানুয়েল উগার্তে এবং ডিয়োগো ডালোটের গোলে তারা ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায়।

এর কিছুক্ষণ পরেই ব্রুনো ফার্নান্দেজের একটি ভলি ক্রসবারে লেগে ফিরে আসে।

ম্যাচের ২০ মিনিট বাকি থাকতে, কোরেন্টিন টলিসোর গোলে ম্যাচে ফেরে লিওঁ। এরপর নিকোলাস তাগ্লিয়াফিকোর গোলে স্কোর ২-২ হয়।

অতিরিক্ত সময়ে টলিসো দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন। এরপর রায়ান শেরকির গোলে এগিয়ে যায় লিওঁ।

পরে আলেকজান্দ্রে লাকাজাতের পেনাল্টি গোলে ব্যবধান আরও বাড়ে।

খেলার শেষ মুহূর্তে ব্রুনো ফার্নান্দেজের পেনাল্টি এবং কোবি মাইনুর গোলে ইউনাইটেড ম্যাচে ফেরে।

এরপর হ্যারি ম্যাগুইয়ারের গোলে ইউনাইটেডের জয় নিশ্চিত হয়।

ওপটার তথ্য অনুযায়ী, ইউরোপের কোনো বড় ম্যাচে, খেলার ১২০ মিনিটের মধ্যে দুটি গোল করার রেকর্ড এই প্রথম।

একইসঙ্গে অতিরিক্ত সময়ে ৫টি গোল হওয়ার ঘটনাও এটাই প্রথম।

ম্যাচ শেষে ইউনাইটেড ম্যানেজার রুবেন অ্যামোরিম বলেন, “আমি মনে করি, এ কারণেই আমরা এই খেলাটিকে এত ভালোবাসি।

একজন কোচের এই মৌসুমে অনেক হতাশা থাকে, খারাপ মুহূর্ত আসে – কিন্তু এমন মুহূর্তগুলো সব কষ্টের অবসান ঘটায়।

সেমিফাইনালে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের প্রতিপক্ষ স্প্যানিশ ক্লাব অ্যাতলেটিকো বিলবাও। আগামী ১লা মে অ্যাওয়ে ম্যাচে তারা মাঠে নামবে।

অন্যদিকে, দিনের অন্য ম্যাচে, নরওয়েজিয়ান ক্লাব বোডো/গ্লিমট, ইতালির ক্লাব লাজিওকে পরাজিত করে সেমিফাইনালে উঠেছে।

কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগে ২-০ গোলে জেতার পর, দ্বিতীয় লেগেও তারা দারুণ লড়াই করে।

লাজিও-র বিপক্ষে খেলার অতিরিক্ত সময়ে গোল করে বোডো/গ্লিমট।

এটি ছিল তাদের ইউরোপীয় প্রতিযোগিতার সেমিফাইনালে প্রথম অংশগ্রহণ।

বোডো/গ্লিমটের গোলরক্ষক নিকিতা হাইকিন বলেন, “এটা শুধু বোডো/গ্লিমটের জন্য নয়, পুরো নরওয়ের ফুটবলের জন্য ঐতিহাসিক।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *