এক সময়ের জনপ্রিয় স্পাইস গার্লস ব্যান্ডের ‘জিঞ্জার স্পাইস’ হিসেবে পরিচিত, খ্যাতিমান ব্রিটিশ গায়িকা, লেখিকা, এবং অভিনেত্রী জেরি হ্যালিওয়েল-হর্নার। সঙ্গীতের জগৎ থেকে শুরু করে সাহিত্য, অভিনয়—বহু ক্ষেত্রেই তিনি রেখেছেন তাঁর প্রতিভার স্বাক্ষর।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে, ভ্রমণের প্রতি নিজের ভালোবাসার কথা জানিয়েছেন তিনি, সেই সঙ্গে তুলে ধরেছেন বইয়ের প্রতি তাঁর বিশেষ আকর্ষণের কথা।
জেরির মতে, ভ্রমণ হলো কৌতূহলের এক অবিরাম যাত্রা। তিনি সবসময়ই নতুন কিছু জানতে চান, নতুন অভিজ্ঞতা অর্জন করতে চান।
তাঁর এই অনুসন্ধিৎসু মন তাঁকে বিশ্বের নানা প্রান্তে নিয়ে যায়। তিনি বলেন, “আমি কৌতূহলী মানুষ। আমি মনে করি, সবকিছুই আকর্ষণীয়।”
তাঁর এই ভ্রমণের অভিজ্ঞতা থেকেই জন্ম নেয় তাঁর লেখার উপাদান।
পর্যটনের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে জেরি জানান, প্রকৃতির কাছাকাছি থাকতে তিনি ভালোবাসেন। মরুভূমির বালুকাবেলায় রাতের আকাশ দেখা তাঁর কাছে ছিল এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা।
এছাড়াও, কেপ টাউনের টেবিল মাউন্টেনে ট্রেকিং বা অস্ট্রিয়ার একটি পাহাড়ে তুষারঝড়ের মধ্যে আটকে পড়ার মতো ঘটনাগুলোও তাঁর ভ্রমণের অবিচ্ছেদ্য অংশ।
এই ভ্রমণের স্মৃতিগুলো তাঁর মনে গেঁথে আছে, যা তাঁকে নতুন গান লিখতে অনুপ্রাণিত করেছে।
ভ্রমণের সময় তিনি একটি জিনিস সবসময় সঙ্গে রাখেন, সেটি হলো একটি নোটবুক। নতুন নোটবুকের পরিচ্ছন্ন পাতাগুলোতে লিখতে বসার আনন্দ ভাষায় প্রকাশ করা যায় না বলে জানান তিনি।
পছন্দের গন্তব্য সম্পর্কে জানতে চাইলে, জেরি আলাস্কার মেরু ভালুক দেখতে যাওয়ার ইচ্ছের কথা জানান।
নির্জন সমুদ্র সৈকতে বসে এক কাপ চা পান করা তাঁর কাছে আদর্শ ছুটি কাটানোর ধারণা।
লেখিকা হিসেবেও জেরি সুপরিচিত। তাঁর লেখা ‘রোজি ফ্রস্ট অ্যান্ড দ্য ফ্যালকন কুইন’ বইটি ২০২৩ সালে নিউ ইয়র্ক টাইমস-এর বেস্ট সেলারের তালিকায় স্থান করে নিয়েছিল।
বই লেখার ক্ষেত্রে ভ্রমণের অভিজ্ঞতা কীভাবে কাজে লাগে, সে সম্পর্কে তিনি বলেন, একটি গানের জন্য হয়তো একটি কফির ‘এসপ্রেসো শট’-এর মতো আইডিয়া দরকার হয়, কিন্তু বইয়ের জন্য প্রয়োজন শব্দগুলোকে অনুভব করা।
তাঁর দ্বিতীয় বই ‘রোজি ফ্রস্ট: আইস অন ফায়ার’-এর প্লট তৈরি হয়েছে মাউন্ট ফুজি ভ্রমণের অভিজ্ঞতা থেকে।
ভ্রমণের সময় তিনি প্রায়ই বই লেখেন। উড়োজাহাজে ভ্রমণের সময় সিটের পেছনের পকেটে থাকা নির্দেশিকার পাতায় বা অসুস্থতার বমির ব্যাগেও তিনি আইডিয়া টুকে রাখেন, যেন কোনো কিছুই বাদ না যায়।
বইয়ের ধারণাগুলো তাঁর ভ্রমণের পথে, এমনকি মাঝ আকাশে উড়ন্ত অবস্থায়ও আসতে পারে।
বইয়ের দোকান তাঁর খুব প্রিয়। বিভিন্ন শহরে বইয়ের দোকানে ঢুঁ মারতে তাঁর ভালো লাগে।
বিশেষ করে পুরনো বইয়ের দোকান তাঁর খুব পছন্দের।
তিনি বলেন, পুরনো বইয়ের ধুলোমাখা গন্ধটা তাঁর ভালো লাগে। ভ্রমণের সময় বই পড়া তাঁর কাছে এক ধরনের পরিবর্তনের মতো।
তাঁর মতে, “যদি আপনি বিশ্ব ভ্রমণ করেন, তাহলে আপনার সঙ্গে সবসময় একটি বই থাকবে।”
ভ্রমণ এবং বই—দুটোই যেন তাঁর কাছে জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
তথ্য সূত্র: ট্র্যাভেল + লেজার