নেটফ্লিক্সের জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘র্যানসম ক্যানিয়ন’-এর প্রথম সিজনের সমাপ্তি ঘটেছে সম্প্রতি। টেক্সাসের একটি ছোট শহরের প্রেক্ষাপটে নির্মিত এই ওয়েস্টার্ন ঘরানার রোমান্টিক ড্রামাটি দর্শক মহলে বেশ সাড়া ফেলেছে।
লেখক জোডি থমাসের উপন্যাস অবলম্বনে তৈরি এই সিরিজে প্রেম, বিচ্ছেদ, পারিবারিক সম্পর্ক এবং ক্ষমতার দ্বন্দ্বের এক মনোমুগ্ধকর চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। আসুন, র্যানসম ক্যানিয়নের প্রথম সিজনের গল্পটি সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
গল্পের কেন্দ্রে রয়েছেন স্টেটন কার্কল্যান্ড নামের এক ব্যক্তি, যিনি ডাবল কে র্যাঞ্চের মালিক। স্ত্রীর আকস্মিক মৃত্যু এবং ছেলের বিয়োগের পর তিনি এক কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলেন।
তাঁর জীবনে নতুন করে ভালোবাসার ছোঁয়া লাগে কুইন ও’গ্রেডি নামের এক নারীর আগমনে। কুইন পেশায় একজন পিয়ানোবাদক ছিলেন, যিনি তাঁর জন্ম শহর র্যানসম ক্যানিয়নে ফিরে আসেন এবং গ্রেসিস নামের স্থানীয় ডান্স হল ও বারের দায়িত্ব নেন।
সিরিজটিতে আরও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র রয়েছে। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন—ক্যাপ ফুলার, যিনি একজন দৃঢ়চেতা ব্যক্তি; ডেভিস কলিন্স, যিনি প্রতিদ্বন্দ্বী বার ডব্লিউ র্যাঞ্চের মালিক; লরেন ব্রিগাম, একজন কিশোরী যে নিরাপদ জীবন বেছে নেবে নাকি ভালোবাসার পথে হাঁটবে—এই দ্বিধায় ভুগছিল; এবং লুকাস রাসেল।
গল্পে, কুইন একদিকে ডেভিসের সঙ্গে তার সম্পর্ক এবং অন্যদিকে স্টেটনের সঙ্গে তার “হবে কি হবে না” ধরনের সম্পর্কের দোলাচলে ছিলেন। এই সময়কালে, ডেভিসের একটি চক্রান্ত র্যাঞ্চগুলোর জমি কিনে সেখানে পাইপলাইন তৈরির চেষ্টা চালায়, যা গল্পের মোড় ঘুরিয়ে দেয়।
এই ঘটনার মধ্য দিয়ে দশ পর্বের প্রথম সিজনের সমাপ্তি হয়।
প্রথম সিজনের শেষে, লরেন তার বাবার সম্মান রাখতে গিয়ে রিডের সঙ্গে ডেটিং করতে বাধ্য হয়, কিন্তু গোপনে সে ‘বিদ্রোহী’ রাসেলকে ভালোবাসে। গল্পের শুরুতে ইয়ান্সি গ্রে-কে ক্যাপের নতুন কর্মচারী হিসেবে দেখা যায়।
পরে জানা যায়, ইয়ান্সি আসলে ক্যাপের নাতি, যে তার দাদার কাছ থেকে প্রতিশোধ নিতে এসেছে।
এদিকে, ক্যাপের মৃত্যুর পর তাঁর শেষ ইচ্ছা পূরণ করতে ইয়ান্সি জমি বিক্রি করতে রাজি হয়। তবে, পরবর্তীতে এলি’র (Ellie) অনুরোধে সে তার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে এবং র্যাঞ্চটিকে পরিবারের কাছেই রাখার সিদ্ধান্ত নেয়।
অন্যদিকে, কুইন গ্রেসিসের সংস্কারের জন্য শুরুতে ‘শর্তহীন’ অর্থ নিলেও, পরে সেই অর্থ ফেরত দিতে গিয়ে আর্থিক সংকটে পরে। স্টেটন কুইনকে সাহায্য করতে চাইলেও কুইন তা প্রত্যাখ্যান করে।
অবশেষে, কুইন নিউইয়র্কে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়, যেখানে সে একটি অর্কেস্ট্রা দলের সঙ্গে কাজ করার প্রস্তাব পায়।
গল্পের ক্লাইম্যাক্সে, কুইন ও ডেভিসের মধ্যে বিচ্ছেদ হয় এবং লরেন লুকাসের প্রতি তার ভালোবাসার কথা স্বীকার করে। র্যাঞ্চের ভবিষ্যৎ নিয়েও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়।
স্টেটন তার বাবার সঙ্গে মিলিতভাবে পাইপলাইন তৈরির বিরোধীতা করেন। সিজনের শেষে, স্টেটন ও কুইনের সম্পর্ক কোন দিকে মোড় নেয়, তা স্পষ্ট হয় না।
এখানেই শেষ নয়, র্যানসম ক্যানিয়নের গল্পে র্যান্ডাল কার্কল্যান্ডের মৃত্যুরহস্য উন্মোচন করা হয়। প্রথমে সবাই মনে করে, র্যান্ডাল একটি দুর্ঘটনায় মারা গেছে। কিন্তু পরে জানা যায়, র্যান্ডালের মৃত্যুর পেছনে অন্য কারও হাত ছিল।
ইয়ান্সি এবং এলি’র সম্পর্কও বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছে। ইয়ান্সি, এলি’কে ভালোবাসার প্রমাণ করতে মরিয়া হয়ে ওঠে। ইয়ান্সি এলি’কে বিয়ের প্রস্তাব দিলেও এলি তাৎক্ষণিকভাবে রাজি হন না।
তবে শেষ পর্যন্ত তাদের সম্পর্কের ভবিষ্যৎ কী হবে, তা এখনো অজানা।
র্যানসম ক্যানিয়ন-এর প্রথম সিজনে অনেক ঘটনার ঘনঘটা দেখা গেছে। তবে গল্পের শেষে অনেক কিছুই অস্পষ্ট থেকে যায়।
দ্বিতীয় সিজনের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন দর্শক।
বর্তমানে ওয়েস্টার্ন ঘরানার নাটক-সিনেমা বিশ্বজুড়ে বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। র্যানসম ক্যানিয়নের গল্প বলার ধরন, চরিত্রগুলোর গভীরতা এবং অপ্রত্যাশিত মোড় দর্শকদের আকৃষ্ট করেছে।
তাই, দ্বিতীয় সিজনের জন্য দর্শকদের আগ্রহ আরও বাড়ছে।
তথ্য সূত্র: পিপল