আলোচিত জে কে রাওলিং: হ্যারি পটার থেকে বিতর্কিত নারী!

হ্যারি পটার সিরিজের লেখিকা জে কে রাওলিং বর্তমানে তাঁর মতামত এবং মন্তব্যের জন্য বেশ পরিচিত। রূপকথার জগত থেকে উঠে আসা এই সাহিত্যিক এখন লিঙ্গ পরিচয় সংক্রান্ত বিতর্কে প্রায়শই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে।

সম্প্রতি, যুক্তরাজ্যের সুপ্রিম কোর্টের একটি রায়ের পরে, যা নারীর সংজ্ঞা জৈবিক লিঙ্গের ভিত্তিতে দিয়েছে, রাওলিং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাঁর উল্লাস প্রকাশ করেছেন।

এই ঘটনার সূত্র ধরে, অনেকে মনে করেন, রাওলিং তাঁর পুরনো অবস্থান থেকে সরে এসেছেন, যেখানে তিনি নারীবাদের পক্ষে কথা বলতেন। তাঁর এই নতুন অবস্থান অনেকের কাছে বিতর্কিত এবং সমালোচিত।

তিনি মূলত নারী অধিকার রক্ষার কথা বলেন, এবং সেই সূত্রে নারীদের জন্য আলাদা স্থান ও সুযোগের পক্ষে সমর্থন করেন। তাঁর এই অবস্থানের কারণে, তাঁকে ‘ট্রান্সফোবিক’ হিসেবেও অভিযুক্ত করা হয়।

যদিও রাওলিং এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং তিনি সকল ট্রান্সজেন্ডার ব্যক্তির অধিকারকে সম্মান করেন বলে জানিয়েছেন।

২০১৯ সাল থেকে রাওলিং এই বিষয়ে প্রকাশ্যে কথা বলা শুরু করেন। তিনি বিভিন্ন সময়ে তাঁর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন, যা তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে।

উদাহরণস্বরূপ, ‘মেনসট্রুয়েট করে এমন মানুষ’ – এই ধরনের শব্দ ব্যবহারের মাধ্যমে তিনি নারী শব্দটির প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। তাঁর এই ধরনের মন্তব্যের কারণে হ্যারি পটার চলচ্চিত্রে অভিনয় করা ড্যানিয়েল র‍্যাডক্লিফ, এমা ওয়াটসন এবং রুপার্ট গ্রিন্টের মতো তারকারাও তাঁর সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করেছেন।

বিতর্ক সত্ত্বেও, জে কে রাওলিং একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি এবং লেখক হিসেবে এখনো পরিচিত। তিনি বিভিন্ন দাতব্য কাজের সঙ্গে জড়িত, যার মধ্যে তাঁর ‘ভোলান্ট’ নামক একটি সংস্থা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

এই সংস্থা নারী ও শিশুদের কল্যাণে কাজ করে। এছাড়াও, তিনি তাঁর মায়ের নামে একটি গবেষণা ও চিকিৎসা কেন্দ্র তৈরি করতে সহায়তা করেছেন, যা মাল্টিপল স্ক্লেরোসিস রোগের চিকিৎসার জন্য উৎসর্গীকৃত।

তাঁর কাজের বাণিজ্যিক দিক বিবেচনা করলেও, বিতর্ক তাঁর খ্যাতির ওপর তেমন প্রভাব ফেলতে পারেনি বলেই মনে হয়। সম্প্রতি, হ্যারি পটার সিরিজের ওপর ভিত্তি করে এইচবিও একটি নতুন টিভি সিরিজ তৈরি করছে, যেখানে রাওলিং নির্বাহী প্রযোজক হিসেবে কাজ করছেন।

তাঁর লেখা ‘কোরমোরান স্ট্রাইক’ সিরিজের উপন্যাসগুলিও বিবিসি-তে প্রদর্শিত হচ্ছে। রাওলিংয়ের মতে, তাঁর উত্তরাধিকার নিয়ে তিনি চিন্তিত নন, বরং বর্তমান সময়ে তিনি কিভাবে বাঁচেন, সেটাই তাঁর কাছে গুরুত্বপূর্ণ।

তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *