চকলেট এখন বিশ্বজুড়ে উদ্বেগের কারণ, বিশেষ করে এর দাম বাড়তে শুরু করায়। একদিকে যেমন কোকোয়ার দাম আকাশ ছুঁয়েছে, তেমনই যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য নীতিও এর পেছনে বড় ভূমিকা রাখছে।
এর ফলস্বরূপ, শুধু আমেরিকাতেই নয়, সারা বিশ্বের ভোক্তাদের পকেটেই এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে।
পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলোতে, যেখানে বিশ্বের প্রায় ৭০ শতাংশ কোকোয়া উৎপাদিত হয়, সেখানে আবহাওয়াগত পরিবর্তনের কারণে চরম দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে। খরা এবং বিভিন্ন রোগবালাইয়ের কারণে কোকোয়া চাষ ব্যাহত হচ্ছে, ফলে উৎপাদন মারাত্মকভাবে কমে গেছে।
একারণেই কোকোয়ার দাম কয়েক বছরের ব্যবধানে টন প্রতি ২,০০০ ডলার থেকে বেড়ে ১২,০০০ ডলারের বেশি হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রেও এর প্রভাব পড়েছে। সেখানকার বৃহত্তম চকলেট প্রস্তুতকারক হার্শে তাদের চকলেটের দাম বাড়িয়েছে, কিন্তু তাতেও তারা চাহিদা ধরে রাখতে হিমশিম খাচ্ছে। এমনকি, গত বছর তাদের মুনাফা গত সাত বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে ছিল।
বাজার বিশ্লেষকদের মতে, চকলেটের দামে এই অস্থিরতার মূল কারণ হলো কোকোয়ার দাম বৃদ্ধি।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমদানি শুল্ক নীতির কারণেও চকলেটের দাম বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এই শুল্কের ফলে আমদানি করা কোকোয়া এবং প্যাকেজিং সামগ্রীর দাম বাড়বে, যা চূড়ান্তভাবে ভোক্তাদের উপর চাপ সৃষ্টি করবে।
যদিও এই শুল্কের প্রভাব এখনো পুরোপুরি বোঝা যাচ্ছে না, তবে ধারণা করা হচ্ছে, এর ফলে বিভিন্ন পণ্যের দাম গড়ে ৩ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে।
চকলেট ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছোট ব্যবসায়ীরা এই পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়ছেন। কারণ, বড় কোম্পানিগুলোর মতো তাদের এত বেশি সম্পদ বা বাজারের ক্ষমতা নেই।
ছোট ব্যবসার মালিকরা বলছেন, দাম বাড়ার কারণে ব্যবসা টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে এবং অনেককে ব্যবসা গুটিয়ে নিতে হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্ববাজারে কোকোয়ার দামের এই অস্থিরতা এবং বাণিজ্য নীতির পরিবর্তন কেবল যুক্তরাষ্ট্রের জন্যই নয়, বরং বিশ্বজুড়ে খাদ্যপণ্য এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দামের উপর প্রভাব ফেলতে পারে। বাংলাদেশের ভোক্তাদেরও এই বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে, কারণ বিশ্ব বাজারের এই পরিবর্তনগুলো আমাদের বাজারেও বিভিন্ন পণ্যের দাম এবং সহজলভ্যতার উপর প্রভাব ফেলতে পারে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান