বিয়ে ও মাতৃত্ব নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য! তোলপাড় সৃষ্টিকারী জাপানি লেখকের চাঞ্চল্যকর স্বীকারোক্তি

জাপানি ঔপন্যাসিক সায়াকা মুরাতা: সমাজের অচেনা পথে এক নারীর অন্বেষণ

সায়াকা মুরাতা, জাপানি সাহিত্যের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র, যিনি তাঁর লেখনীর মাধ্যমে সমাজের চিরাচরিত ধারণাকে প্রশ্ন করেছেন। তাঁর লেখালেখি, বিশেষ করে বহুল-আলোচিত উপন্যাস ‘কনভেনিয়েন্স স্টোর ওম্যান’-এর জন্য তিনি বিশ্বজুড়ে পরিচিত।

সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে তাঁর নতুন উপন্যাস ‘ভ্যানিশিং ওয়ার্ল্ড’, যেখানে তিনি মানুষের সম্পর্ক, বিবাহ এবং মাতৃত্বের ধারণা নিয়ে নতুন করে আলোকপাত করেছেন।

মুরাতা-র জন্ম জাপানে, এবং তাঁর শৈশব কেটেছে চিবা-তে। তাঁর বাবা ছিলেন বিচারক, মা ছিলেন গৃহিণী। ঐতিহ্যবাহী পরিবারে বেড়ে ওঠা মুরাতার জীবনে স্বাভাবিকতার সংজ্ঞা ছিল ভিন্ন।

তিনি সব সময় সমাজের চোখে ‘সাধারণ’ হতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তাঁর ভেতরের শিল্পীসত্ত্বা তাঁকে অন্য পথে চালিত করেছে। তাঁর লেখায় সেই ভিন্নতার ছোঁয়া স্পষ্ট।

‘কনভেনিয়েন্স স্টোর ওম্যান’-এর প্রধান চরিত্র ফুরুকো, যিনি একটি ছোট দোকানে কাজ করেন, সমাজের প্রচলিত ধারণার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে চলতে চান না।

মুরাতার এই উপন্যাসটি শুধু জাপানেই নয়, বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। এর কারণ সম্ভবত, সমাজের চাপ ও প্রত্যাশার বিরুদ্ধে একজন মানুষের নিজস্ব পথ খুঁজে বের করার গল্পটি সর্বজনীন।

তাঁর অন্যান্য রচনাতেও এই ধরনের বিদ্রোহী মনোভাব দেখা যায়। ‘ভ্যানিশিং ওয়ার্ল্ড’ উপন্যাসে মুরাতা এমন এক ভবিষ্যতের চিত্র তুলে ধরেছেন, যেখানে যৌনতা ও ভালোবাসার ধারণা প্রায় বিলুপ্তির পথে।

মুরাতা ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহ ও মাতৃত্বকে লেখিকা জীবনের জন্য বাধা হিসেবে দেখেন। তাঁর মতে, বিবাহ অনেকটা “জিম্মিদশার” মতো, আর মাতৃত্ব যেন এক অভিশাপ।

তাঁর এই ধারণা তাঁর লেখার মাধ্যমে সমাজকে নতুন করে ভাবতে উৎসাহিত করে। জাপানে নারীদের প্রতি সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি এবং নারীদের অধিকার নিয়েও তিনি সোচ্চার।

তাঁর মতে, জাপানি সমাজে আজও নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম চলছে।

সায়াকা মুরাতা-র লেখায় নারী জীবনের সংকট, সমাজের চাপ, এবং মানুষের ভেতরের ভিন্নতাকে তুলে ধরা হয়। তাঁর কাজের মাধ্যমে তিনি বুঝিয়ে দেন, “স্বাভাবিক” হওয়ার ধারণা আসলে একটি জটিল বিষয়, যা প্রতিটি মানুষের জন্য আলাদা।

তিনি তাঁর লেখার মাধ্যমে পাঠকের মনে গভীর রেখাপাত করেন, যা সম্ভবত তাঁর সাফল্যের মূল চাবিকাঠি।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *