৫ হাজার ডলারে ভুরু প্রতিস্থাপন, জীবন বদলে গেল নারীর! কিভাবে?

এক সময়ের ফ্যাশন প্রবণতা, যা অনেকের কাছেই পরিচিত – অতিরিক্ত ভ্রু প্লাক করা বা ওয়াক্সিং করার ফলে ভ্রু পাতলা হয়ে যাওয়ার সমস্যা অনেকের জীবনেই এক গভীর ক্ষত সৃষ্টি করে।

এই সমস্যার সমাধানে একজন মার্কিন মহিলা, ব্রুক মার্চান্ড, একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছেন।

তিনি তার পাতলা হয়ে যাওয়া ভ্রু জোড়া আগের রূপে ফিরিয়ে আনতে প্রায় ৫,৫০০ মার্কিন ডলার (প্রায় ৬ লক্ষ টাকার বেশি) খরচ করে একটি সফল ভ্রু প্রতিস্থাপন করিয়েছেন।

মার্চান্ডের মতে, নব্বই দশকের শেষের দিকে এবং ২০০০ সালের শুরুর দিকে, পাতলা ভ্রু-এর ফ্যাশন জনপ্রিয়তা লাভ করে।

জনপ্রিয় গায়ক-শিল্পী যেমন গ्वেন স্টেফানি এবং ক্রিস্টিনা আগুইলেরার মতো তারকারা এই ফ্যাশনকে আরও জনপ্রিয় করে তুলেছিলেন।

এই ফ্যাশন অনুসরণ করতে গিয়ে অনেকেই তাদের ভ্রু অতিরিক্ত প্লাক বা ওয়াক্সিং করতে শুরু করেন, যার ফলস্বরূপ ভ্রুয়ের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যাহত হয়।

এই প্রবণতা মার্চান্ডের জীবনেও প্রভাব ফেলেছিল।

তিনি একসময় তার ভ্রু পাতলা করার জন্য নিয়মিত ওয়াক্সিং করতেন।

এর ফলস্বরূপ, তার ভ্রুয়ের ঘনত্ব কমে যায়।

২০১৭ সালে তিনি মাইক্রোব্লাডিংয়ের (ত্বকের নিচে রং প্রবেশ করিয়ে ভ্রু ঘন করার প্রক্রিয়া) মাধ্যমে ভ্রু পুনরায় আগের রূপে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেন, তবে এতে তিনি প্রত্যাশিত ফল পাননি।

মার্চান্ড জানান, মাইক্রোব্লাডিংয়ের মাধ্যমে প্রথমে ভালো দেখা গেলেও সময়ের সাথে সাথে তার ভ্রুগুলো একটি অন্যরকম রূপ নিতে শুরু করে।

ভ্রুয়ের রং পরিবর্তন হয়ে একসময় তা হালকা গোলাপি হয়ে যায়।

পরবর্তীতে, যখন তিনি এটি পুনরায় করার চেষ্টা করেন, তখন তাকে পুরনো কাজটি অপসারণ করতে বলা হয়।

তবে ৪২ বছর বয়সে, মার্চান্ড এই সমস্যার একটি সমাধান খুঁজে পান।

তিনি জানতে পারেন যে ভ্রু প্রতিস্থাপন (eyebrow transplant) সম্ভব।

জনপ্রিয় মডেল ক্রিসি টিগেনকে এই পদ্ধতি অনুসরণ করতে দেখে তিনি অনুপ্রাণিত হন।

এরপর তিনি মিয়ামিতে যান এবং সেখানে ডা. অ্যান্টনি বারেদের (Dr. Anthony Bared) তত্ত্বাবধানে ভ্রু প্রতিস্থাপন করান।

ডা. বারেদ পেশাগতভাবে দীর্ঘদিন ধরে চুল প্রতিস্থাপনের কাজ করে আসছেন।

এই পদ্ধতির বিষয়ে মার্চান্ড বলেন, “এই প্রক্রিয়াটি ছিল সম্পূর্ণ ব্যথামুক্ত”।

তিনি জানান, মাথার পেছন থেকে চুল নিয়ে ভ্রুতে প্রতিস্থাপন করা হয়।

প্রতিস্থাপনের পর, চোখের চারপাশে সামান্য ফোলাভাব ও কালশিটে দেখা দিয়েছিল।

তবে তিনি কোনো ব্যথা অনুভব করেননি।

বর্তমানে, তিনি নিয়মিতভাবে তার ভ্রু-এর যত্ন নিচ্ছেন।

তার নতুন ভ্রু দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ায়, তাকে সপ্তাহে একবার তা ছাঁটতে হয়।

এছাড়াও, তিনি প্রতি ৬-৮ সপ্তাহ অন্তর ভ্রু ল্যামিনেশন (brows lamination) করেন।

এই অস্ত্রোপচারের ফলাফল সম্পর্কে মার্চান্ড বলেন, এটি তার জীবনকে বদলে দিয়েছে।

তিনি বলেন, “আমি আমার ফলাফলে খুবই খুশি।”

তিনি আরও জানান যে, এই প্রতিস্থাপনের পর তার চেহারায় ১০ বছরেরও বেশি বয়স কমে গেছে বলে মনে হয়।

মার্চান্ড নিয়মিতভাবে তার ভ্রু নিয়ে প্রশংসা পান।

যারা তার ভ্রু প্রতিস্থাপনের কথা জানেন না, তারা প্রায়ই অবাক হন।

তিনি এই অস্ত্রোপচারটি আবারও করতে চান এবং অন্যদেরও এটি করার পরামর্শ দেন।

যারা প্রতিদিন ভ্রু আঁকতে ক্লান্ত বা মাইক্রোব্লাডিংয়ের ফলাফল নিয়ে হতাশ, তাদের জন্য মার্চান্ডের অভিজ্ঞতা একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে।

তথ্য সূত্র: পিপল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *