ফিলিস্তিনি সরকার পবিত্র আল-আকসা মসজিদ ধ্বংসের হুমকির বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারী বিভিন্ন দলের পক্ষ থেকে এই মসজিদটি ভেঙে সেখানে একটি মন্দির বানানোর হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের মতে, এটি মুসলিম বিশ্বের তৃতীয় পবিত্রতম স্থান এবং ফিলিস্তিনিদের সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। গাজায় চলমান সংঘাতের মধ্যে এই ধরনের হুমকির কারণে পরিস্থিতি আরও গুরুতর হয়ে উঠছে।
সম্প্রতি, হিব্রু ভাষায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কিছু পোস্ট দেখা যাচ্ছে, যেখানে আল-আকসা মসজিদ ধ্বংসের আহ্বান জানানো হয়েছে। এমনকি, ‘নেক্সট ইয়ার ইন জেরুজালেম’ শিরোনামে একটি ভিডিও তৈরি করে মসজিদের ধ্বংস এবং ‘তৃতীয় মন্দির’ নির্মাণের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।
ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, তারা মনে করে, এই ধরনের প্রচারণা ‘জেরুজালেমের পবিত্র স্থানগুলোতে আঘাত হানার ধারাবাহিক উসকানি’। তারা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং জাতিসংঘের প্রতি এই বিষয়টিকে গুরুত্ব সহকারে দেখার আহ্বান জানিয়েছে।
আল-আকসা মসজিদটি পূর্ব জেরুজালেমে অবস্থিত। এই এলাকাটি বর্তমানে ইসরায়েলের দখলে রয়েছে। যদিও মসজিদের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে রয়েছে জর্ডান, তবে এর ভেতরে প্রবেশের অনুমতি দেয় ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ।
জানা যায়, ডানপন্থী ইসরায়েলি রাজনীতিবিদ এবং বসতি স্থাপনকারীরা প্রায়ই এই স্থানে প্রবেশ করে এবং সেখানে ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালন করে।
এই স্থানটি ইহুদিদের কাছেও গুরুত্বপূর্ণ, কারণ তারা বিশ্বাস করে, এটি তাদের প্রথম ও দ্বিতীয় মন্দিরের স্থান ছিল। ৭০ খ্রিস্টাব্দে রোমানরা দ্বিতীয় মন্দিরটি ধ্বংস করে দেয়।
ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের পুরোনো নিয়ম অনুযায়ী, ইহুদি ও অন্য ধর্মাবলম্বীরা নির্দিষ্ট সময়ে এই স্থানে যেতে পারেন, তবে সেখানে প্রার্থনা করা বা কোনো ধর্মীয় প্রতীক প্রদর্শনের অনুমতি তাদের নেই।
গত বছর, ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতামার বেন-গভির আল-আকসা মসজিদ চত্বরে একটি ইহুদি উপাসনালয় নির্মাণের কথা বলেছিলেন, যা ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়। ফিলিস্তিনিরা আশঙ্কা করছেন, হেবরনের ইব্রাহিমী মসজিদের মতো এখানেও বিভাজন সৃষ্টি হতে পারে।
উল্লেখ্য, ইতামার বেন-গভির ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে এখন পর্যন্ত অন্তত ছয়বার পবিত্র স্থানটি পরিদর্শন করেছেন, যা ফিলিস্তিনিদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে।
ফিলিস্তিন সরকার মনে করে, আল-আকসা মসজিদের ওপর এই ধরনের হুমকি একটি গুরুতর বিষয়। তারা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে দ্রুত হস্তক্ষেপের আবেদন জানিয়েছে, যাতে এই অঞ্চলের উত্তেজনা প্রশমিত করা যায় এবং পবিত্র স্থানগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা