গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৯২, বিশ্বজুড়ে শোক!

গাজায় ইসরায়েলি বোমা হামলায় গত দুদিনে ৯২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন দুই শতাধিক, যাদের অনেকের অবস্থা গুরুতর।

ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়েছেন আরও বহু মানুষ, যাদের কাছে উদ্ধারকর্মীরা পৌঁছাতে পারছেন না। শনিবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এই তথ্য জানিয়েছে।

গত ১৭ থেকে ১৯ এপ্রিলের মধ্যে চালানো এসব হামলায় হতাহতের এই ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে খান ইউনিসে শরণার্থী শিবির লক্ষ্য করে চালানো একটি বিমান হামলায় অন্তত ১৫ জন শিশু নিহত হয়েছে।

রাফায় চালানো হামলায় এক মা ও তাঁর মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের সঙ্গে আরও দুই জন নিহত হয়েছেন।

সংবাদ সংস্থা আল জাজিরার প্রতিবেদক তারেক আবু আজ্জুম জানান, “গাজার সাধারণ মানুষের জন্য রাতের বেলাটা এক বিভীষিকা। এখানে কেউ নিরাপদ নয় – ঘরবাড়ি, অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র কিংবা উদ্বাস্তু শিবিরেও নয়।”

গত ১৮ মার্চ থেকে ইসরায়েল গাজায় সামরিক অভিযান জোরদার করেছে। এর আগে তারা সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য যুদ্ধ বিরতি ঘোষণা করেছিল।

ইসরায়েল গাজার ভেতরে ‘নিরাপত্তা অঞ্চল’ তৈরি করতে চাইছে। একইসঙ্গে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) নির্দেশ অমান্য করে গত ২ মার্চ থেকে গাজায় খাদ্য, জ্বালানি ও ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে তারা।

আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থা অক্সফামের নীতি বিষয়ক প্রধান বুশরা খালিদি জানিয়েছেন, “গাজায় খাদ্য সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। শিশুরা দিনে এক বেলাও খাবার পাচ্ছে না।

অপুষ্টি এবং দুর্ভিক্ষের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।”

এদিকে, হামাস জানিয়েছে, তারা ইসরায়েলের সঙ্গে কোনো প্রকার যুদ্ধ বিরতিতে যেতে রাজি নয়, যতক্ষণ না গাজায় স্থায়ীভাবে যুদ্ধ বন্ধের ঘোষণা এবং ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার করা হচ্ছে।

হামাসের একজন শীর্ষস্থানীয় নেতা সামি আবু জুহরি বলেছেন, “হামাসকে নিরস্ত্র করার প্রস্তাব কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এটা আমাদের কাছে লাল রেখা, এমনকি লক্ষাধিক লাল রেখা।”

হামাস বর্তমানে তাদের হাতে থাকা জিম্মিদের মুক্তি দিতে রাজি আছে, তবে এর বিনিময়ে তারা গাজায় যুদ্ধ বন্ধ এবং ইসরায়েলি সেনাদের সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাহারের নিশ্চয়তা চায়।

ধারণা করা হচ্ছে, হামাসের হাতে এখনো প্রায় ৫৮ জন জিম্মি বন্দী রয়েছেন, তাঁদের মধ্যে অনেকে এরই মধ্যে মারা গেছেন।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা এখন ৫১ হাজার ৬৫০ জনে দাঁড়িয়েছে। আহত হয়েছেন ১ লাখ ১৬ হাজার ৫০০ জন।

আল জাজিরার প্রতিবেদক তারেক আবু আজ্জুম আরও জানিয়েছেন, “গাজায় সবার মুখেই গভীর মানসিক আঘাতের ছাপ। এখানকার মানুষজন ক্লান্ত, বিধ্বস্ত। তাঁরা তাঁদের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত।”

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *