যুক্তরাজ্য ও চীনের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বজায় রাখার পক্ষে মত দিয়েছেন দেশটির অর্থমন্ত্রী র্যাচেল রিভস। সম্প্রতি খবর পাওয়া গেছে, যুক্তরাষ্ট্র চাইছে চীন থেকে অর্থনৈতিকভাবে দূরে থাকতে, এবং এর জন্য তারা যুক্তরাজ্যকে চাপ দিতে পারে। তবে রিভস মনে করেন, বেইজিংয়ের সঙ্গে সম্পর্ক কমানো ‘ভুল’ হবে।
আসন্ন সফরে র্যাচেল রিভস যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা করতে ওয়াশিংটন যাবেন। তিনি জানান, চীনের সঙ্গে সম্পর্ক কম রাখাটা ব্রিটেনের জন্য ‘ভুল’ সিদ্ধান্ত হবে। উল্লেখ্য, চীন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি।
সম্প্রতি ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা বাণিজ্য চুক্তি ও শুল্ক আলোচনার মাধ্যমে চীনকে একঘরে করার চেষ্টা করবেন। যদিও যুক্তরাজ্যের বিরোধী দল লেবার পার্টির নেতা কেইর স্টারমার এরই মধ্যে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে কথা বলেছেন। এর আগে, ওয়াশিংটন কর্তৃক ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের পর এই প্রথম দুই দেশের মধ্যে এমন আলোচনা হলো।
রিভস আরও জানান, চীনের বিনিয়োগকে যুক্তরাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো থেকে দূরে রাখা হবে। তবে, তিনি লন্ডনের স্টক এক্সচেঞ্জে ‘শেইন’-এর তালিকাভুক্তির পক্ষে মত দিয়েছেন। পোশাক প্রস্তুতকারক এই কোম্পানিটি চীনের হলেও বর্তমানে সিঙ্গাপুরে নিবন্ধিত। কোম্পানিটির বিরুদ্ধে সরবরাহ শৃঙ্খল এবং শ্রমিক শোষণের অভিযোগ রয়েছে।
অন্যদিকে, চীনা কোম্পানি ‘জিংই’-এর মালিকানাধীন ‘ব্রিটিশ স্টিল’ কারখানায় কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে সম্প্রতি জরুরি ক্ষমতা প্রয়োগ করেছে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট। জানা গেছে, কারখানাটিতে প্রয়োজনীয় সরবরাহ নিশ্চিত করতে ‘জিংই’ কর্তৃপক্ষের গাফিলতি ছিল। এছাড়া, চীনা কোম্পানিগুলোকে যুক্তরাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোতে বিনিয়োগের অনুমতি দেওয়া হবে কিনা, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
চীনের দূতাবাস কিছু ব্রিটিশ এমপির চীনবিরোধী মন্তব্যের সমালোচনা করেছে। তাদের মতে, এটি দেশটির প্রতি ‘ঔদ্ধত্যপূর্ণ, অজ্ঞতা ও বিকৃত মানসিকতার’ বহিঃপ্রকাশ।
বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনার জন্য রিভস যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্টের সঙ্গেও বৈঠক করবেন। আশা করা হচ্ছে, কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই শুল্ক হ্রাসের বিষয়ে একটি চুক্তি হতে পারে।
এদিকে, শুক্রবার ট্রাম্পের সঙ্গে ৩৫ মিনিটের ফোনালাপে স্টারমার বাণিজ্য রক্ষার গুরুত্বের কথা উল্লেখ করেন। ব্রিটিশ কর্মকর্তারা যুক্তরাষ্ট্রকে একটি খসড়া চুক্তি দিয়েছেন, যেখানে ইস্পাত, অ্যালুমিনিয়াম এবং গাড়ির ওপর শুল্ক কমানোর প্রস্তাব রয়েছে। তবে, এতে ওষুধখাত অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। ট্রাম্প খুব শীঘ্রই এই বিষয়ে শুল্ক ঘোষণা করতে পারেন, যা ব্রিটিশ ওষুধ কোম্পানিগুলোর জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে।
তথ্য সূত্র: The Guardian