বিশ্ব স্নুকার চ্যাম্পিয়নশিপে অপ্রত্যাশিত ফলাফলের সাক্ষী হয়েছে ক্রীড়াপ্রেমীরা, যেখানে বর্তমান সময়ের অন্যতম পরিচিত মুখ কাইরেন উইলসনকে পরাজিত করে হইচই ফেলে দিয়েছেন চীনের তরুণ খেলোয়াড় লেই পেইফান।
শেফিল্ডের ক্রুসিবল থিয়েটারে অনুষ্ঠিত হওয়া এই খেলায় উইলসনকে ১০-৯ ফ্রেমের ব্যবধানে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালের দিকে একধাপ এগিয়ে গিয়েছেন পেইফান।
এই হারের ফলে, স্নুকারের ‘ক্রুসিবল অভিশাপ’ যেন আবারও একবার সত্য প্রমাণিত হলো।
১৯৭৭ সাল থেকে, যখন এই চ্যাম্পিয়নশিপটি শেফিল্ডে অনুষ্ঠিত হতে শুরু করে, তখন থেকে এখন পর্যন্ত কোনো প্রথমবার জয়ী খেলোয়াড় পরের বছর তার খেতাব ধরে রাখতে পারেননি।
উিলসন সেই তালিকায় বিংশতম খেলোয়াড়, যিনি এই অভিশাপের শিকার হলেন।
শনিবারের খেলায় উইলসন ৬-৩ ফ্রেমের ব্যবধানে এগিয়ে ছিলেন, কিন্তু পরবর্তীতে পেইফান দারুণভাবে ফিরে আসেন এবং টানা ৬টি ফ্রেম জিতে জয়ের সম্ভাবনা তৈরি করেন।
শেষ পর্যন্ত, স্নায়ুচাপ ধরে রেখে পেইফান জয় নিশ্চিত করেন এবং অন্যতম বড় অঘটনের জন্ম দেন।
পেইফানের এই জয় শুধু তার ক্যারিয়ারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল না, বরং চীনা স্নুকারের ভবিষ্যৎ এর জন্যেও এটি একটি বড় ইঙ্গিত বহন করে।
দীর্ঘদিন ধরে চীনের স্নুকার খেলোয়াড়রা বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন, এবং পেইফানের এই জয় সেই স্বপ্নকে আরও উজ্জ্বল করেছে।
২০২৩ সালে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের অভিযোগে ১০ জন চীনা খেলোয়াড়কে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল, যা চীনের স্নুকারের জন্য একটি কঠিন সময় ছিল।
তবে, এবারের টুর্নামেন্টে রেকর্ড সংখ্যক ১০ জন চীনা খেলোয়াড় অংশগ্রহণ করেছেন, যা তাদের ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দেয়।
চীনের আরেক তরুণ খেলোয়াড় ঝাও জিনটংও এই টুর্নামেন্টে ভালো পারফর্ম করার সম্ভাবনা নিয়ে এসেছেন।
স্নুকার বিশ্বে চীনের উত্থান একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা হতে পারে।
এই চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল ম্যাচটি চীনের প্রায় ২০০ মিলিয়ন মানুষ উপভোগ করে।
অনেকের মতে, যদি কোনো চীনা খেলোয়াড় এই চ্যাম্পিয়নশিপ জিততে পারেন, তাহলে স্নুকারের জনপ্রিয়তা আরও বাড়বে এবং ভবিষ্যতে টুর্নামেন্ট স্থানান্তরের সম্ভাবনাও তৈরি হতে পারে।
লেই পেইফান বা অন্য কোনো চীনা খেলোয়াড় এই টুর্নামেন্ট জিততে পারেন কিনা, সেটি সময়ই বলবে।
তবে, উইলসনকে হারানোর মধ্য দিয়ে পেইফান বুঝিয়ে দিয়েছেন যে, চীনা স্নুকারের সোনালী দিন আসন্ন।
তথ্য সূত্র: The Guardian