মায়ের সঙ্গে সম্পর্ক: ৪০-এর কোঠায় এক নারীর মানসিক টানাপোড়েন।
একজন নারী, বয়স চল্লিশের বেশি, তাঁর মায়ের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে অনলাইনে পরামর্শ চেয়েছেন। ব্রিটেনের একটি ফোরামে তিনি তাঁর অভিজ্ঞতার কথা জানান। তাঁর মতে, মায়ের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কটা বরাবরই ছিল “উপরুপরি”।
ছোটবেলায় মা তাঁদের কোনো ভালোবাসাই দিতেন না, বরং তাঁর ব্যবহার ছিল ভীতিকর।
ওই নারী জানিয়েছেন, গত ছয় মাস ধরে তাঁর মা তাঁর প্রতি “নিষ্ঠুর” ও “ছোটলোক”-এর মতো আচরণ করছেন। যদিও মায়েরই ভুল ছিল, কিন্তু মা নীরবতা অবলম্বন করে তাঁকে ” control” করতে চেয়েছেন।
নারীটি লিখেছেন, “আমি অবশেষে মায়ের কাছে ছুটে গিয়েছিলাম এবং মা যেন এতেই জয়ী হয়েছিলেন।”
তিনি আরও জানান, “গত সপ্তাহে একই ধরনের ঘটনা ঘটেছিল। মা আমার সঙ্গে খুব রুক্ষ ও খারাপ ব্যবহার করেন এবং ফোন রেখে দেন। তারপর থেকে আমাদের মধ্যে কোনো যোগাযোগ নেই।”
ওই নারী জানান, সাধারণত তাঁরা প্রতিদিন কথা বলেন, কিন্তু মায়ের এই আচরণের পর পাঁচ দিন ধরে কোনো কথা হয়নি। তিনি লিখেছেন, “আমি এতে খুব বিরক্ত এবং হতাশ হয়েছি।
এটা শুনে হয়তো দুর্বল মনে হতে পারে, কিন্তু আমি কি ভুল করছি, যদি বলি, ‘আর নয়!’ এবং মায়ের কাছে ছুটে না যাই?”
নারীটির অভিযোগ, তাঁর মা মনে করেন, তাঁদের মধ্যে “কঠোর মা-মেয়ের” সম্পর্ক, যা তাঁদের ছোটবেলায় ছিল, তা তাঁদের মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বজায় রাখা উচিত।
তিনি আরও বলেন, “চল্লিশ বছরের বেশি সময় ধরে এই অদ্ভুত মা-মেয়ের সম্পর্ক বজায় রেখে আমি হতাশ হয়ে পড়ছি।
আমার মনে হয়, আমার কোনো ভুল না থাকা সত্ত্বেও, আমার মায়ের কাছে ছুটে যাওয়া উচিত। কিন্তু একই সঙ্গে, তাঁর এমন ব্যবহারের কারণে আমি খুব রাগ অনুভব করি।
তিনি তাঁর মাকে “অপরিণত” হিসেবে বর্ণনা করেছেন এবং নিজেকে “প্রায় দুর্বল” বলেছেন, কারণ তিনি মাকে তাঁর ওপর এই ধরনের “নিয়ন্ত্রণ” রাখতে দিয়েছেন।
তিনি আরও যোগ করেন, “আমি তাঁর এই ধরনের কারসাজি ও ছোটলোকি আচরণে অতিষ্ঠ হয়ে গেছি।”
এই পোস্টের নিচে অনেকে তাঁদের নিজেদের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে একজন লিখেছেন, “আমিও যেন আপনার মতোই একটি পোস্ট লিখতে পারতাম।
আপনার প্রতি আমার পূর্ণ সহানুভূতি রয়েছে। আপনি মোটেও ভুল করছেন না।” তিনি আরও জানান, “আমি জানি একজন আত্ম-প্রেমী মায়ের কারণে কেমন উদ্বেগ হতে পারে।
কারণ আমিও সারা জীবন তাঁর এই নিয়ন্ত্রণ ও নীরবতার শিকার হয়েছি।”
অন্য একজন মন্তব্য করেছেন, “আপনি এখন একজন প্রাপ্তবয়স্ক এবং আপনি কীভাবে এই পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে চান, তা নির্ধারণ করার অধিকার আপনার আছে।
আমরা প্রায়ই বাবা-মায়ের ক্ষেত্রে এই বিষয়টি ভুলে যাই এবং তাঁদের আচরণের প্রতি আমাদের ছেলেবেলার মতো প্রতিক্রিয়া দেখাই। এখন সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় আপনার।”
আরেকজন মন্তব্যকারী জানতে চেয়েছেন, ওই নারীর মা তাঁর জীবনের অন্য লোকেদের সঙ্গে কেমন আচরণ করেন।
তিনি বলেন, “আমি মনে করি, আপনার কিছুদিনের জন্য তাঁর থেকে দূরে থাকা উচিত।
আপনি যেমনটা বলেছেন, আপনি একজন প্রাপ্তবয়স্ক এবং আপনার নিজের সন্তান আছে। তাই মায়ের উচিত আপনাকে একজন সমান মানুষ হিসেবে দেখা। তাঁর যা খুশি বলার কোনো অধিকার নেই এবং আপনার উচিত সেটার উপযুক্ত জবাব দেওয়া।
যদি তাঁর কোনো বন্ধু না থাকে এবং আপনার বোন ও অন্যান্য আত্মীয়দের সঙ্গেও তাঁর যোগাযোগ সীমিত থাকে, তাহলে সম্ভবত তিনিই সমস্যা।”
পরিবার এবং সম্পর্কের ক্ষেত্রে, পারস্পরিক সম্মান ও সুস্থ যোগাযোগ খুবই জরুরি। বিশেষ করে, বাংলাদেশের সংস্কৃতিতে পরিবারের বন্ধন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তবে, মানসিক স্বাস্থ্য বজায় রাখতে মাঝে মাঝে নিজের সীমানা নির্ধারণ করাও প্রয়োজন।
তথ্য সূত্র: People